
ছবি: সংগৃহীত
মরিস বুকাইলি, একজন বিখ্যাত ফরাসি সার্জন এবং বিজ্ঞানী, একটি খ্রিস্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। তবে, তাঁর জীবন একটি অভূতপূর্ব মোড় নেয় যখন ১৯৮০-এর দশকে মিশরের ফেরাউনের মমি নিয়ে গবেষণা করার জন্য তাকে নিযুক্ত করা হয়। ফ্রান্সে মিশরের কাছ থেকে এই মমি নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ পায় এবং বুকাইলি ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা মমির উপর একাধিক পরীক্ষা পরিচালনা করেন।
গবেষণার সময়, বুকাইলি একটি অস্বাভাবিক প্রমাণ পান যা ধারণা দেয় যে ফেরাউন ডুবে মারা গিয়েছিল এবং তার দেহ দ্রুত মমিফাই করা হয়েছিল যাতে তা অক্ষত রাখা যায়। এটি তাকে চিন্তিত করে তোলে, কেন এই প্রাচীন মিশরীয়রা এমন একটি দেহ কিভাবে সংরক্ষণ করতে পারল, যখন এই আবিষ্কারটি ১৮৯৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু কুরআন, যা ১৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পাঠিত হচ্ছে, আগেই এই তথ্য উল্লেখ করেছে।
একজন সহকর্মী তাঁকে জানান যে, কুরআনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে ফেরাউন ডুবে মারা গিয়েছিল এবং তার দেহ অক্ষত রাখা হয়েছিল। এটি বুকাইলিকে অবাক করে দেয় এবং তিনি ভাবেন, "কিভাবে মুহাম্মদ (সা.) এক হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে এই তথ্য জানতেন, যখন আধুনিক বিজ্ঞান এই তথ্যটি সম্প্রতি আবিষ্কার করেছে?"
এটি আরও তদন্ত করার জন্য, বুকাইলি তাওরাত এবং ইঞ্জিল থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন, কিন্তু সেখানেও এই ধরনের কোনো উল্লেখ খুঁজে পাননি। শেষে, তিনি সৌদি আরবে একটি চিকিৎসা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন, যেখানে মুসলিম অ্যানাটমিস্টরা কুরআনের সেই আয়াতটি তাঁর সামনে পড়েন: "আজ আমরা তোমাকে তোমার দেহসহ নিরাপদে মুক্তি দেব, যাতে এটি তোমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি নিদর্শন হয়ে থাকে" (ইউনুস: ৯২)। এই আবিষ্কারের পর বুকাইলি ঘোষণা করেন যে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছেন।
ফ্রান্সে ফিরে এসে, বুকাইলি আধুনিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এবং কুরআনের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে ১০ বছর গবেষণা করেন। তার গবেষণার ফলস্বরূপ তিনি বই লেখেন 'দ্য বাইবেল', 'দ্য কুরআন এন্ড সাইন্স' যেখানে তিনি দেখান কিভাবে কুরআন আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই বইটি ছিল একটি বৈপ্লবিক কাজ, যা লাখ লাখ কপি বিক্রি হয় এবং বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়।
এছাড়া, ১৯৮৮ সালে ফরাসি একাডেমি তাকে ইতিহাসে তার কাজের জন্য পুরস্কৃত করে। তাঁর খ্রিস্টান সার্জন থেকে মুসলিম স্কলার হওয়ার গল্প একটি অনুপ্রেরণাদায়ক উদাহরণ, যেখানে বিজ্ঞান এবং ধর্ম একত্রে গভীরভাবে মিলিত হয়েছে।
সূত্র: https://www.daily-sun.com/post/692181
আবীর