
ছবি: সংগৃহীত।
রাসুল (সা.) একবার তার দুই স্ত্রী আয়েশা (রা.) ও হাফসা (রা.)-এর অনুযোগের কারণে মধু পান না করার শপথ করেন। এ ঘটনায় মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের ৬৬ নম্বর সূরা, সূরা তাহরিম নাযিল করেন, যার অর্থ "হারাম মনে করা"।
সাধারণত, আসরের নামাজের পর নবীজি তার স্ত্রীদের সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটাতেন। তবে একদিন তিনি দীর্ঘসময় ধরে জয়নাব বিনতে জাহশ (রা.)-এর ঘরে অবস্থান করেন, যেখানে তিনি মধু পান করেছিলেন। এতে আয়েশা ও হাফসা (রা.) ক্ষুব্ধ হন এবং নবীজিকে অনুযোগ করেন। ফলে তিনি শপথ করেন যে, আর মধু খাবেন না।
এ প্রেক্ষাপটেই সূরা তাহরিম নাযিল হয়, যেখানে মহান আল্লাহ বলেন:
"হে নবী! আল্লাহ তোমার জন্য যা হালাল করেছেন, তুমি কেন তা হারাম করছো তোমার স্ত্রীদের খুশি করার জন্য? আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।" (সূরা তাহরিম: ১)
এরপরের আয়াতে বলা হয়েছে, যদি কেউ হালাল কিছু নিজের ওপর হারাম করে শপথ নেয়, তবে সে শপথ ভাঙতে হবে এবং কাফফারা আদায় করতে হবে। আল্লাহ বলেন:
"আল্লাহ তোমাদের শপথ থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আল্লাহ তোমাদের সহায়, আর তিনি সর্বজ্ঞ, সত্যজ্ঞানী।" (সূরা তাহরিম: ২)
এই সূরায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেওয়া হয়েছে—বিশ্বাসীগণ যেন নিজেদের ও নিজেদের পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করেন। আল্লাহ বলেন:
"হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদের ও তোমাদের পরিবারকে সেই আগুন থেকে রক্ষা করো, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। যার দায়িত্বে রয়েছে নির্মম, কঠোর ফেরেশতারা, যারা আল্লাহর আদেশ লঙ্ঘন করে না এবং যা আদেশ করা হয়, তা-ই পালন করে।" (সূরা তাহরিম: ৬)
পাঠের মূল শিক্ষা:
- আল্লাহ যা হালাল করেছেন, তা হারাম করা উচিত নয়।
- শপথ করলে, তা ভাঙার বিধান রয়েছে এবং কাফফারা আদায় করতে হয়।
- পরিবারকে সঠিক পথে পরিচালিত করা ঈমানদার পুরুষের দায়িত্ব।
- শুধু নবী বা ভালো মানুষের পরিবারে জন্ম নিলেই জান্নাতের নিশ্চয়তা নেই; ব্যক্তির নিজস্ব কর্মই তার পরিণতি নির্ধারণ করবে।
এই শিক্ষাগুলো আমাদের পারিবারিক ও ধর্মীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
নুসরাত