
ছবি: সংগৃহীত
কুরআন প্রাকৃতিক পৃথিবী সম্পর্কে চমকপ্রদ ধারণা প্রদান করে, বিশেষ করে পর্বতগুলির সম্পর্কে, যা বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের আগেই এসব ধারণা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। কুরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত যা পর্বত সম্পর্কে বর্ণিত, তা হলো সূরা আন-নামল (২৭:৮৮) এ:
"তুমি পর্বতগুলোকে দৃঢ় মনে করো, কিন্তু সেগুলো বায়ুর মত চলে যাবে..."
এই আয়াতে পর্বতগুলির গতিশীলতার বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে, যা মেঘের চলাচলের সাথে তুলনা করা হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে যে পৃথিবীর ঘূর্ণন, যা ঘণ্টায় ১,৬৬৭ কিলোমিটার গতিতে চলে, এবং মহাদেশগুলোর মুভমেন্ট এই ধারণাটিকে সমর্থন করে। আলফ্রেড ওয়েগেনারের মহাদেশ সরে যাওয়ার তত্ত্ব, যা ২০ শতকের প্রথম দিকে প্রস্তাবিত হয়েছিল এবং বর্তমানে তা গ্রহণযোগ্য, কুরআনের এই বর্ণনার সাথে মিলে যায়, যেখানে মহাদেশগুলো প্রতি বছর ১ থেকে ৫ সেন্টিমিটার হারে একে অপর থেকে সরে যাচ্ছে।
এছাড়া, কুরআনে পর্বতকে পৃথিবীর স্থিতিশীলতা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যেমন সূরা আন-নাবা (৭৮:৬-৭) এ বলা হয়েছে:
"আপনি কি দেখেননি যে, আমরা পৃথিবীকে একটি বিশ্রামস্থল এবং পর্বতগুলোকে তার পিন হিসাবে স্থাপন করেছি?"
ভৌতগত অনুসন্ধানগুলো দেখায় যে, পর্বতগুলো ভূমিতে স্থায়ীভাবে প্রোথিত থাকে এবং পৃথিবীকে স্থিতিশীল রাখতে ভূমিকা রাখে, বিশেষ করে ভূমিকম্পের প্রভাব কমাতে।
সূরা আন-নাযিয়াত (৭৯:৩২) এ আরও বলা হয়েছে:
"এবং পর্বতগুলোকে তিনি (আল্লাহ) দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছেন।"
এটি পর্বতের শারীরিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে, যেখানে ভূগোলবিদ্যা অনুযায়ী, পর্বতগুলোর গভীরে এমন শিকড় থাকে যা পৃথিবীর মাটিকে স্থিতিশীল রাখে। পৃথিবীর স্তরগুলো—কোর, ম্যান্টেল এবং ক্রাস্ট—ডিমের শেলের মতো, যেখানে পর্বতগুলো পৃথিবীর মাটির স্থিতিশীলতার জন্য আবশ্যক।
এছাড়া, সূরা লুকমান (৩১:১০) এ বলা হয়েছে:
"তিনি পৃথিবীতে পর্বতগুলোকে দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছেন, যাতে তা তোমাদেরকে কাঁপিয়ে না দেয়..."
এই আয়াতটি পর্বতের ভূমিকাকে পূর্বাভাস দেয় যা ভূমিকম্পের প্রভাব কমায়। "হটস্পট" নামে পরিচিত বড় বড় মাগম্যাটিক সঞ্চালনগুলোর ধারণাও এই দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন করে। এই ভূগোলিক গঠনগুলো, যা গভীর থেকে উঠে এসে পৃথিবীর স্তরটি ভেদ করে এবং পৃষ্ঠে পৌঁছে স্থির হয়ে যায়, পৃথিবীকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
কুরআনের এই আয়াতগুলো পর্বতের গতি, পৃথিবীর স্থিতিশীলতা এবং মহাদেশগুলোর সরে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানসম্মত আবিষ্কারগুলোকে প্রতিফলিত করে, যা ১৪ শতক আগে কুরআনের মধ্যে প্রকাশিত হয়েছিল।
সূত্র: https://www.islamandihsan.com/the-moving-mountains
আবীর