
রোজা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুকন এবং ফরজ ইবাদত। আল্লাহ তাআলা বলেন ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর; যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)
আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়তে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার ও কামাচার থেকে বিরত থাকার নামই রোজা। কিন্তু সিগারেট পানাহার জাতীয় কিছু না হলেও রোজা অবস্থায় সিগারেট খাওয়া পানাহারের মতোই নিষিদ্ধ। কেউ যদি রমজানের রোজা রেখে স্বেচ্ছায় ধুমপান করে, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং তার ওপর কাজা ও কাফফারা উভয়টি আবশ্যক হবে। (আদ্দুররুল মুখতার: ২/৩৯৫; হাশিয়াতুত তহতাবি আলাদ্দুর: ১/৪৫০; ইমদাদুল ফাত্তাহ: ৬৮১; আপ কি মাসায়েল আওর উনকা হল: ৪/৫৭৬)
কাজা অর্থ একটি রোজার বদলে পরবর্তীতে আরেকটি রোজা রাখা আর কাফফারা আদায়ের তিনটি পদ্ধতি রয়েছে ১. একটি দাস মুক্ত করা, ২. ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা ভালোভাবে তৃপ্তিসহকারে আহার করানো ৩. ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজা রাখা। এ সম্পর্কে ফতোয়ার কিতাবে এসেছে— রোজার কাফফারা হলো রোজা ভঙ্গকারী দাস মুক্ত করতে অক্ষম হলে দুই মাস লাগাতার রোজা রাখবে। আর দুই মাস রোজা রাখতে ব্যর্থ হলে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা পেট ভরে খানা খাওয়াবে অথবা ৬০ জন মিসকিনকে সদকায়ে ফিতর পরিমাণ গম, আটা, চাল ইত্যাদি অথবা সমপরিমাণ নগদ টাকা দেবে। একজন মিসকিনকে ৬০ দিন দুই বেলা খাওয়ালেও কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। (আলমগিরি: ১/৩০৫, রদ্দুল মুহতার: ৩/৩৯০)
জেনে রাখা কর্তব্য- ইসলামি শরিয়তে রোজা ভঙ্গ করার প্রতিবিধান রাখা হলেও একটি রোজার শত ভাগ ক্ষতিপূরণ জীবনেও সম্ভব নয়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি (শরিয়ত অনুমোদিত) কোনো কারণ ছাড়া বা রোগ ছাড়া রমজান মাসের একটি রোজা ভেঙে ফেলে, তার পুরো জীবনের রোজা দিয়েও এর ক্ষতিপূরণ হবে না। যদিও সে জীবনভর রোজা রাখে। (সুনানে তিরমিজি: ৭২৩)
অতএব, রোজার ব্যাপারে সাবধান হতে হবে। রোজা রেখে ধুমপান করার মতো যাবতীয় নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের শরিয়তের সকল বিধি-বিধান মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
সজিব