ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১

পবিত্র লাইলাতুল কদরের মাহাত্ম্য ও এ রাতটি চেনার ১৩টি নিদর্শন

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ২০ মার্চ ২০২৫

পবিত্র লাইলাতুল কদরের মাহাত্ম্য ও এ রাতটি  চেনার ১৩টি নিদর্শন

ছবি: সংগৃহীত

মাহে রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও মহিমান্বিত রাত লাইলাতুল কদর। এই রাত সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে কদরের রাত সন্ধান কর। (সহিহ বোখারি)

হাদিস অনুযায়ী, এই রাতে ইবাদত করলে অতীতের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত এই রাতকে যথাযথভাবে পালন করা। তবে, কীভাবে চেনা যাবে এই বরকতময় রাতকে? হাদিসের আলোকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন দেওয়া হলো।

লাইলাতুল কদর চেনার ১৩টি উপায়

১. এটি রমজানের শেষ দশকে ঘটে। রাসূল (সা.) বলেছেন, রমজানের শেষ দশদিনে কদরের রাত অনুসন্ধান কর। (সহিহ বোখারি)

২. বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে বেশি সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯তম রাতে খোঁজ করতে বলা হয়েছে।

৩. সর্বোচ্চ সম্ভাবনা ২৭তম রজনীতে। উবাই ইবনে কাব (রা.) রাসূল (সা.)-এর হাদিসের ভিত্তিতে বলেছেন, এটি ২৭তম রাতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। (সহিহ মুসলিম)

৪. রাতটি স্থানান্তরশীল হতে পারে। অর্থাৎ প্রতি বছর একই তারিখে হয় না, আল্লাহর ইচ্ছায় পরিবর্তন হতে পারে।

৫. গভীর অন্ধকার নেমে আসবে না। বরং পরিবেশ থাকবে শান্ত, মৃদু আলোকিত ও প্রশান্তিময়।

৬. নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া থাকবে। অত্যধিক গরম বা প্রচণ্ড ঠাণ্ডা হবে না।

৭. হালকা বাতাস প্রবাহিত হবে। বাতাস হবে কোমল ও প্রশান্তিদায়ক।

৮. ইবাদতে বিশেষ অনুভূতি আসবে। এই রাতে ইবাদত করলে আত্মিক প্রশান্তি ও তৃপ্তি পাওয়া যাবে।

৯. স্বপ্নযোগে ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে। কোনো মুমিনকে আল্লাহ বিশেষ স্বপ্নের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারেন।

১০. সেই রাতে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। কিছু বর্ণনায় বলা হয়েছে, লাইলাতুল কদরের রাতে বৃষ্টি বর্ষণের সম্ভাবনা থাকে।

১১. সকালের সূর্য হবে অনন্য। এই রাতের পরের দিন সূর্যের আলো থাকবে কোমল, তেজ কম থাকবে এবং পূর্ণিমার চাঁদের মতো মনে হবে।

১২. আসমান থেকে এক বিশেষ প্রশান্তি নেমে আসবে। এই রাতে ফেরেশতারা দুনিয়ায় অবতরণ করেন এবং আশেপাশে এক বিশেষ প্রশান্তিময় পরিবেশ তৈরি হয়।

১৩. শয়তানদের কার্যক্রম কমে যায়। এ রাতে শয়তানের প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম থাকে এবং মানুষ বেশি বেশি ইবাদতের দিকে মনোযোগী হয়।

লাইলাতুল কদরের ইবাদতের ফজিলত

এই মহিমান্বিত রাতের বিশেষ ইবাদতের মাধ্যমে মুমিনরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারেন। মহান আল্লাহ বলেন, লাইলাতুল কদর হলো হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। (সুরা আল-কদর: ৩)

এ রাতের ইবাদত কবুল হলে হাজার মাসের (প্রায় ৮৩ বছরের) ইবাদতের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। তাই রমজানের শেষ দশকে বেশি বেশি ইবাদত, তাওবা ও দোয়া করার মাধ্যমে আমরা লাইলাতুল কদরের ফজিলত অর্জন করতে পারি।
 

কানন

×