ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১

রোজা: ধৈর্য এবং কষ্ট সহিষ্ণুতা শেখার মাস

প্রকাশিত: ১০:০৩, ১৯ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১০:০৪, ১৯ মার্চ ২০২৫

রোজা: ধৈর্য এবং কষ্ট সহিষ্ণুতা শেখার মাস

রমজান মাসে রোজা পালন একটি মহান ইবাদত, যা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে ধৈর্য ধারণ করার শিক্ষা দেয়। রোজাদার ব্যক্তি এই মাসে পানাহার ও সব ধরনের পাপকাজ থেকে বিরত থাকে, যা তাকে সহিষ্ণুতা এবং কষ্ট সহ্য করার শিক্ষা দেয়। আল্লাহ তাআলা এই মাসে মুমিনদের উদারতা, সততা, ধৈর্য এবং সহনশীলতা প্রদর্শন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রোজার মাধ্যমে ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহর অফুরন্ত রহমত লাভ করা যায় এবং সবরের বিনিময়ে জান্নাতের প্রতিদান নির্ধারিত রয়েছে, এমনটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসে উল্লেখিত।

রোজা শুধুমাত্র খাবার বা পানীয় থেকে বিরত থাকা নয়; এটি আমাদের চরিত্র ও কুপ্রবৃত্তিকে দমন করে। রোজা রাখলে, ব্যক্তির অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অতিরিক্ত চাহিদা যেমন চোখ, কান, জিহ্বা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে মানুষ কুপ্রবৃত্তির উপর জয়ী হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হয় এবং তার অন্তরের মলিনতা ও কুটিলতা দূর হয়। রোজা রাখলে ধনীর অন্তরে দরিদ্রের জন্য সহানুভূতি তৈরি হয়, যা সমাজে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সাহায্য করার মনোভাব সৃষ্টি করে।

হাদিসে এসেছে, রোজাদারের জন্য জান্নাতে একটি বিশেষ দরজা রয়েছে, যার নাম "রাইয়ান"। এই দরজা দিয়ে শুধু রোজাদাররা প্রবেশ করবেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলছেন, নিয়মিত রোজা পালনে শরীরের বিভিন্ন রোগ ও জীবাণু ধ্বংস হয় এবং মানসিক প্রশান্তি লাভ হয়। রোজা মানুষকে আল্লাহ ও বান্দার অধিকার আদায়ে যোগ্য করে তোলে।

রমজান মাসে, সারাদিন পানাহার পরিত্যাগ করা, শারীরিক ও মানসিক কষ্ট সহ্য করা, দীর্ঘ সময় মসজিদে দাঁড়িয়ে তারাবি নামাজ পড়া—এ সবই ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা অর্জনের অনুশীলন। সওয়াবের আশায় এই কষ্ট সহ্য করা হয়, কারণ সওয়াব কষ্টের অনুপাতেই বৃদ্ধি পায়। জীবনের সর্বক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান পালন ও ধৈর্য ধারণের মাধ্যমে মানুষ পরিপূর্ণ ইবাদত করতে শিখে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "রোজাদার যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং ঝগড়া-বিবাদে না লিপ্ত হয়।" মাহে রমজানে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা অর্জন করে মানুষ নিজের এবং সমাজের কল্যাণে কাজ করতে পারে। আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেছেন, "ধৈর্যশীলদের তাদের ধৈর্যের প্রতিদান পরিপূর্ণভাবে দেওয়া হবে।"

রোজা কেবল ব্যক্তিগত কল্যাণের জন্য নয়, বরং এটি মুসলমান সমাজের জন্য একটি দলগত কল্যাণ বয়ে আনে, যা ঈমানদারের সমষ্টিগত জীবনে একটি শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে।

সূত্র : https://www.youtube.com/watch?v=DSKVxulHiKk

রাজু

×