
ছবি: সংগৃহীত
দুনিয়ার জীবনে নানা সীমাবদ্ধতা থাকার পরেও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিদিন তাহাজ্জুদের সময় দাঁড়িয়ে যেতেন। লম্বা লম্বা সূরা পড়তেন, কেরাত পড়তেন।
সিজদা দেওয়ার পর্যাপ্ত জায়গা ছিল না। বুখারি শরীফে এসেছে, সিজদার সময় মহানবী (সা:) মা আয়েশার পায়ে চিমটি কাটতেন। মা আয়েশা বুঝতে পারতেন মহানবী (সা:) ইবাদতে আছেন। তিনি সরে যেতেন। বিশ্বনবী (সা:) যখন সিজদা থেকে উঠে দাঁড়াতেন তখন মা আয়েশা আবার পা বিছিয়ে শুয়ে পড়তেন।
মা আয়েশা বলেন, বিশ্ব নবী নামাজে এতো সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকতেন যে তাঁর পা দুটো ফুলে যেত। প্রথম থাকাতেই সূরা বাকারা, সূরা আল ইমরান পড়ে ফেলতেন। হাত বেঁধে রাখতে রাখতে মহানবীর হাতগুলো ব্যাথা হয়ে যেত। ক্লান্ত হয়ে গেলে কিছু সময়ের জন্য তিনি হাত ছেড়ে দিতেন, তারপর আবার হাত বাঁধতেন।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লম্বা সময় ধরে তাহাজ্জুদ পড়তেন। তাহাজ্জুদ পড়লে সার্বিক মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন আল্লাহ তা’আলা।
মহানবী (সা:) বলেন, “আমার কাছে জিবরাঈল এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ! যত ইচ্ছা বেঁচে থাকুন, আপনি মারা যাবেনই। যাকে ইচ্ছা ভালো বাসুন, আপনি তার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হবেন। যা ইচ্ছা তাই আমল করুন, আপনি তার বদলা পাবেন। আর জেনে রাখুন, মুমিনের মর্যাদা হল তাহাজ্জুদের নামাজে এবং তার ইজ্জত হল লোকেদের অমুখাপেক্ষী থাকায়।” (ত্বাবরানী, হাকেম, মুস্তাদরাক, বায়হাকী)
তাহাজ্জুদের নামাজ পড়লে আল্লাহর সাথে নৈকট্য বাড়িয়ে দেন আল্লাহ তাআলা। যে ব্যক্তি আল্লাহর হয়ে যায়, গোটা বিশ্ব তার হয়ে যায়।
হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী কারিম (সা.) বলেন, 'তোমরা কিয়ামুল লাইলের প্রতি যত্নবান হও। কেননা তা তোমাদের পূর্ববর্তী নেককারদের অভ্যাস এবং রবের নৈকট্য লাভের বিশেষ মাধ্যম। আর তা পাপরাশী মোচনকারী এবং গুনাহ থেকে বাধা প্রদানকারী।' (তিরমিজি)
ভোরের সময় যে ঘুম সেটিকে আরবিতে বলা হয় হুজুদ। হুজুদের ঘুমকে ত্যাগ করে যে নামাজ পড়া হয় তাকে বলে সালাতুল হুজুদ বা তাহাজ্জুদ।
মায়মুনা