ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

নামাজ না পড়লে রোজার সওয়াব পাওয়া যাবে?

প্রকাশিত: ১৭:২৯, ১৬ মার্চ ২০২৫

নামাজ না পড়লে রোজার সওয়াব পাওয়া যাবে?

ছবি: সংগৃহীত

নামাজ ও রোজা ইসলাম ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ রুকন এবং ফরজ ইবাদত। নামাজ পাঁচ ওয়াক্ত এবং প্রতি বছর ১২ মাস ধরে আদায় করতে হয়, তবে রোজা শুধুমাত্র রমজান মাসে ফরজ। একজন মুসলমানের জন্য নামাজ নিয়মিতভাবে বছরের প্রতিটি দিন আদায় করা যেমন বাধ্যতামূলক, তেমনি রমজান মাসে রোজা রাখা একান্ত আবশ্যক। এখানে কোনো অবস্থাতেই এই ফরজ ইবাদত বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই।

ইসলাম কখনোই এমন কিছু অনুমোদন করে না যেখানে একজন মুসলমান শুধু রোজা রাখবেন, কিন্তু নামাজ পড়বেন না। নামাজ ছাড়ার কোনো সুযোগ ইসলাম দেয়নি। ঈমান ও কুফরের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল নামাজ। নামাজ না পড়াকে মহানবী (স.) কুফরি কাজ এবং কাফিরের স্বভাব বলে চিহ্নিত করেছেন। এক হাদিসে জাবির (রা.) উল্লেখ করেছেন, "আমি নবী (স.)-কে বলতে শুনেছি, বান্দা এবং শিরক-কুফরের মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত ছেড়ে দেওয়া" (মুসলিম: ১৪৮)। হজরত বুরাইদা (রা.) বলেন, "রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, আমাদের ও কাফেরদের মধ্যে মুক্তির প্রতিশ্রুতি হলো নামাজ। তাই যে ব্যক্তি নামাজ ছেড়ে দেয়, সে কুফুরি কাজ করে" (তিরমিজি: ২৬২১)। অন্য একটি হাদিসে বলা হয়েছে, "যার ভেতর নামাজ নেই, তার ভেতর দ্বীনের কোনো অংশ নেই" (মুসনাদে বাজ্জার: ৮৫৩৯)।

নামাজ না পড়লে অন্যান্য আমল নষ্ট হওয়ার ব্যাপারেও নবী (স.) উম্মতকে সতর্ক করেছেন। একটি হাদিসে রাসুল (স.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি আছরের নামাজ ত্যাগ করবে, তার সমস্ত আমল নষ্ট হয়ে যাবে" (বুখারি: ৫২০)।

ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রহ.) এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, "বেনামাজি দুই ধরনের—এক. সম্পূর্ণ নামাজ ত্যাগ করা, যার কারণে তার সমস্ত আমল বিফলে যাবে; দুই. বিশেষ দিনে বিশেষ নামাজ ত্যাগ করা, যার কারণে ঐ বিশেষ দিনের আমল বিফলে যাবে" (আস সালাত, পৃ. ৬৫)।

তাহলে, নামাজ না পড়েই রোজার সওয়াব পাওয়া যাবে এমন ধারণা রাখা উচিত নয়। বরং, সওয়াব নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে। আবার, নামাজ না পড়েও রোজা আদায় হবে না—এমনও বলা যায় না, কারণ নামাজ ও রোজা দুটি আলাদা ইবাদত। তবে আমাদের সবার উচিত নামাজ আদায় করা এবং রোজাও রাখা। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এই তাওফিক দান করুন। আমিন।

শিহাব

×