
ছবি: সংগৃহীত
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুগন্ধি বা আতর ব্যবহার করতে খুবই পছন্দ করতেন। তিনি সুগন্ধির প্রতি বিশেষ অনুরাগী ছিলেন এবং এর ব্যবহারকে মহৎ কাজ হিসেবে বিবেচনা করতেন। হাদিসগুলোতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে তিনটি সুগন্ধি অত্যন্ত পছন্দ করতেন, তা নিম্নরূপ:
মেশক
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, উত্তম সুগন্ধি হলো মেশক। (তিরমিজি, হাদিস : ৯৯২)
এদেশে মেশককে কস্তুরিও বলা হয়। মিলন ঋতুতে পুরুষ হরিণের পেটের কস্তুরি গ্রন্থি থেকে সুগন্ধ বের হয়। মেয়ে হরিণকে তা আকৃষ্ট করে। ঋতুর শেষে যা হরিণের শরীর থেকে খসে পড়ে। পরে সেটি রোদে শুকিয়ে কস্তুরি তৈরি করা হয়।
চন্দন ও জাফরান
আল্লামা ইবনে আবদুল বার (রহ.) ‘তামহিদ’ নামক কিতাবে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-এর একটি হাদিস ব্যাখ্যা করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) জাফরান সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
মসলা ও খাবার হিসেবেও এটি ব্যবহৃত হয়। এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এতে উন্নতমানের ক্যারোটিন থাকে। যাকে ক্রোসিন বলা হয়। বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার কোষ-লিউকেমিয়া, ওভারিয়ান কারসিনোমা, কোলন অ্যাডেনোকারসিনোমা প্রভৃতি বিনষ্ট করতে সাহায্য করে এটি।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, জাফরান স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। জাপানে পারকিনসন এবং স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া নানা রোগে তা প্রয়োগ করা হয়।
আম্বর
হজরত আয়েশা (রা.)-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, রাসুলুল্লাহ (সা.) কী ধরনের সুগন্ধি ব্যবহার করতেন। জবাবে তিনি বলেন, নবীজি (সা.) মেশক ও আম্বরের সুগন্ধি ব্যবহার করতেন। (নাসায়ি শরিফ, হাদিস : ৫০২৭)
সমুদ্রে এক ধরনের মাছ আছে। এ থেকে মোমের মতো জিনিস পাওয়া যায়। সেটি দিয়ে মহামূল্যবান এ সুগন্ধি তৈরি করা হয়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুগন্ধি ব্যবহারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন এবং মুসলিমদেরও সুগন্ধি ব্যবহার করার জন্য উৎসাহিত করেছেন, তবে অবশ্যই এটি পরিপূর্ণ পরিশুদ্ধতা এবং সৌন্দর্য প্রকাশের জন্য হতে হবে, যাতে মুসলিমরা নিজেরা এবং সমাজে আরও ভালোভাবে একে অপরকে সম্মান দিতে পারে।
ফারুক