ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১

রমজানের জুমাবারে যে আমলগুলো করলে বেশি সওয়াব পাবেন

প্রকাশিত: ১২:৪৬, ১৪ মার্চ ২০২৫

রমজানের জুমাবারে যে আমলগুলো করলে বেশি সওয়াব পাবেন

ছবি সংগৃহীত

পবিত্র রমজান মাস রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। এই মাসে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের বিশেষ রহমত প্রদান করেন। রমজানের জুমাবার আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই দিনটি ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ দিনগুলোর মধ্যে একটি।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “সূর্য উদিত হওয়া দিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উত্তম দিন হলো জুমার দিন। এই দিন আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই জান্নাত থেকে পৃথিবীতে নামানো হয়।” (মুসলিম, হাদিস: ৮৫৪)

তাই রমজানের জুমাবারকে আরও বরকতময় করতে আমাদের উচিত কিছু বিশেষ আমল করা। আসুন, দেখে নেই সেই আমলগুলো—

১. বেশি বেশি দরুদ পাঠ করুন

জুমার দিনে নবী করিম (সা.)-এর প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠের সুপারিশ করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমরা জুমার দিনে আমার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা তোমাদের দরুদ আমার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।” (আবু দাউদ, হাদিস: ১৫৩১)

২. সূরা কাহফ পড়ুন

জুমার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলোর মধ্যে একটি হলো সূরা কাহফ তেলাওয়াত করা। রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে, সে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত একটি নূর পাবে।” (মুস্তাদরাকে হাকিম, হাদিস: ৩৩৯২)

৩. জুমার নামাজের জন্য আগেভাগে মসজিদে যান

জুমার দিন খুব তাড়াতাড়ি মসজিদে গিয়ে নামাজের জন্য অপেক্ষা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত আমল। রাসুল (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমার দিন সুন্দরভাবে গোসল করে, মসজিদে প্রথম দিকে উপস্থিত হয়, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনে ও চুপচাপ থাকে, তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (বুখারি, হাদিস: ৮৮৩)

৪. জুমার বিশেষ মুহূর্তে দোয়া করুন

জুমার দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, যখন আল্লাহ তাআলা বান্দার দোয়া কবুল করেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, “জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যদি কোনো বান্দা সে সময়ে আল্লাহর কাছে কিছু চায়, তবে তিনি অবশ্যই তা কবুল করেন।” (বুখারি, হাদিস: ৯৩৫)

৫. বেশি বেশি ইস্তিগফার ও দোয়া করুন

রমজানের জুমার দিনে আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং বেশি বেশি ইস্তিগফার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ বলেন, “তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয় তিনি অতীব ক্ষমাশীল।” (সূরা নুহ: ১০)

৬. গরিব-দুঃখীদের সহায়তা করুন

জুমার দিনের অন্যতম একটি বরকতময় আমল হলো গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা। রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার কষ্ট দূর করবেন।” (মুসলিম, হাদিস: ২৬৯৯)

৭. তাহাজ্জুদ ও নফল নামাজ আদায় করুন

রমজানের জুমার রাতে তাহাজ্জুদ ও অন্যান্য নফল ইবাদতে মশগুল হওয়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।

রমজানের জুমাবার হলো দোয়া কবুলের বিশেষ সুযোগ এবং গুনাহ মাফের শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনে বেশি বেশি ইবাদত, কুরআন তিলাওয়াত, দরুদ পাঠ, দান-সদকা ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে বান্দা আল্লাহর বিশেষ রহমত লাভ করতে পারেন। তাই, এই দিনটিকে গুরুত্ব সহকারে পালন করা উচিত।

আশিক

×