
ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে একটি টেলিভিশন চ্যানেলে 'ইসলাম ও রমজান' নামে এক ধর্মীয় আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এই অনুষ্ঠানে গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) 'বিবাহিতরা যেভাবে রমজান মাস কাটাবেন' বিষয়ে আলোচনা করেছেন ইসলামিক বক্তা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী নোমান বিল্লাহ।
রমজান মাসে স্বামী-স্ত্রীর একজনের প্রত্যাশা অপরজনের জন্য যাতে বোঝা হয়ে না দাঁড়ায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, রমজানে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের রুটিনে পরিবর্তন আসে। খাওয়া-দাওয়া ও ঘুম থেকে শুরু করে পেশাগত কাজের সময় ও ধরণ পর্যন্ত পাল্টে যায়। তাই স্বামী-স্ত্রী উভয়ের দায়িত্ব হলো পরস্পরের শান্তি-স্বস্তি ও সহজতার প্রতি লক্ষ্য রাখা, যেন সর্বোপরি পরস্পরের আচরণ যেন সহযোগিতামূলক হয়।
ধৈর্য, সংযম, সহনশীলতা, দয়া, সহমর্মিতা ও ক্ষমা হলো রমজানের মূল শিক্ষা। আদর্শ দাম্পত্য জীবনের জন্য এই শিক্ষাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান আলোচক নোমান বিল্লাহ। সিয়াম সাধনার মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী উভয়ই এসব গুণ অর্জন করতে পারেন বলেও মনে করেন তিনি।
রসুল (সা.) বলেছেন, 'তোমাদের কেউ যেন রোজা রাখার দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন রোজাদার।' (বুখারী, ১৯০৪)
আলোচক নেমান নবীজি (সা.) এই হাদিস উদ্ধৃত করে বলেন, স্বামী-স্ত্রী পরস্পর কোনো বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে, একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দিবে যে তারা রোজাদার।
রমজান মাসে স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের বিষয়ে অনেকেই ভুল ধারণা পোষণ করে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, অনেকেই মনে করেন, রমজান মাসে স্ত্রী সহবাস নিষিদ্ধ, তবে এটি ভুল ধারণা। রমজানে নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে স্ত্রী সহবাস করা যায় বলে জানান আলোচক নোমান বিল্লাহ।
তিনি পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৮৭ নং আয়াত থেকে বলেন,
'রমজান মাসের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করা হালাল করা হয়েছে।'
এই আয়াত থেকে বোঝা যায় দিনের বেলায় যেমন পানাহার নিষিদ্ধ, তেমনি সহবাসও নিষিদ্ধ। তবে ইফতার থেকে সেহরির শেষ সময় পর্যন্ত এটি বৈধ। রমজানে দিনের বেলায় যেন কোনভাবেই যৌনসম্পর্ক না হয় সে ব্যাপারে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক দৃঢ়তা ও আত্মসংযম থাকা জরুরি বলে মনে করেন নোমান বিল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে ইবাদত করাকে পছন্দ করেন এবং তাদের হৃদয়ে ভালোবাসা ও অনুরাগ বৃদ্ধি করেন। রমজানে সাংসারিক কাজের পরিমাণ বেড়ে যায় বলে জানান তিনি। তাই তার মতে, স্বামীর দায়িত্ব হলো সুযোগমত স্ত্রীকে সাহায্য করা।
হজরত আয়েশা (রা.) এর উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন, রসুল (সা.) তার স্ত্রীদের ঘরের কাজে সহযোগিতা করতেন এবং নামাজের সময় হলে নামাজে চলে যেতেন।
সূত্র: https://tinyurl.com/mrxuna7n
রাকিব