
ছবি: সংগৃহীত
রোজা রাখা অবস্থায় রক্ত দেওয়া নিয়ে অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে রোজা অবস্থায় রক্ত দেওয়া যাবে কি না, তা মূলত নির্ভর করে রক্ত দেওয়ার পর শরীরে কী প্রভাব পড়ে তার উপর।
রোজা ভাঙার মূল কারণগুলো
ইসলামী শরিয়তের বিধান অনুযায়ী, রোজা ভাঙে তখনই যখন কিছু খাওয়া, পান করা বা শরীরের ভেতরে কোনো কিছু প্রবেশ করানো হয়। যেমন—খাবার খাওয়া, পানি পান করা বা ইনজেকশনের মাধ্যমে পুষ্টি গ্রহণ করা। কিন্তু শরীর থেকে কিছু বের হলে রোজা ভাঙে না, যদি তা বেশি পরিমাণে না হয়।
রক্ত দেওয়ার বিষয়ে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি
১. সামান্য রক্ত বের হলে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না – যেমন, কাটা-ছেঁড়া, নাক ফোটা বা দাঁত থেকে সামান্য রক্ত বের হওয়া।
২. সাধারণভাবে রক্তদান করলে রোজা ভাঙবে না, তবে যদি শরীর এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে রোজা রাখা কঠিন হয়ে যায়, তাহলে রোজা ভাঙার কারণ হতে পারে।
হাদিস থেকে জানা যায়, প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) রোজা অবস্থায় হিজামা (শিঙ্গা বা রক্ত সরানোর চিকিৎসা) করিয়েছেন। তাই এক্ষেত্রে রোজা ভাঙে না।
রোজা রেখে রক্ত দেওয়া উচিত হবে কখন?
যদি রক্তদান করার ফলে রোজাদার ব্যক্তি অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোজা রাখা কষ্টকর হয়ে যায়, তবে ইফতারের পর রক্ত দেওয়া উত্তম।
জরুরি প্রয়োজনে, যেমন রোগীর জীবন বাঁচাতে হলে, রোজা থাকা অবস্থায়ও রক্ত দেওয়া জায়েজ রয়েছে।
যদি রক্তদান করার ফলে রোজাদার এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে রোজা ভেঙে ফেলার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে পরবর্তী সময়ে কাজা (বদলি) রোজা রাখতে হবে।
ইসলামের দৃষ্টিতে রোজা রেখে রক্ত দেওয়া সম্পূর্ণ বৈধ, যতক্ষণ না এটি শরীরের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলে। তবে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিলে ইফতারের পর রক্তদান করাই উত্তম। প্রয়োজন হলে রোজার মধ্যেও রক্ত দেওয়া যাবে, তবে রোজা ভেঙে গেলে পরবর্তী সময়ে কাজা করতে হবে।
কানন