
মুসলমানদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত রোজা, শুধুমাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোজা রাখলে শরীরে অনেক ধরনের রোগ-বালাই দূর হয় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। চলুন জানি, রোজার মাধ্যমে কোন রোগগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
১. ডায়াবেটিস
রোজা রাখলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য উপকারী। বিশেষত, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের মাধ্যমে ইনসুলিন লেভেল কমে আসে এবং শরীরের গ্লুকোজ ব্যবস্থাপনা উন্নত হয়। এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার সহায়তা হয়।
২. হৃদরোগ
রোজার কারণে রক্তচাপ কমে যেতে পারে এবং শরীরে কলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে হার্ট অ্যাটাক বা অন্যান্য হৃদরোগের ঝুঁকি কমে আসে। রোজা হৃদপিণ্ডের সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৩. ওবেসিটি (অতিরিক্ত ওজন)
রোজা রাখলে খাওয়া-দাওয়ার নিয়ম এবং পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা ওজন কমাতে সহায়ক। সারা দিনের উপবাসের পরে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ফলে, শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমে এবং অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৪. হজমের সমস্যা
রোজা রাখার ফলে হজম প্রক্রিয়া সুষ্ঠু থাকে। অনেকেরই অরগ্যানিক হজম সমস্যা, যেমন অম্বল, গ্যাস বা বদহজম থাকে। রোজা হজমের সিস্টেমকে স্বাভাবিক রাখে এবং পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড সৃষ্টির ঝুঁকি কমায়।
৫. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
রোজা রাখলে মানুষের মনোভাব শান্ত থাকে এবং মানসিক চাপ কমে। এটি স্নায়ুতন্ত্রকে শিথিল করে এবং দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগ, অতিরিক্ত চিন্তা ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেয়। এই প্রক্রিয়াটি মেডিটেশন বা ধ্যান এর মতো কাজ করে, যা মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক।
৬. ত্বকের সমস্যা
রোজা ত্বকের জন্যও উপকারী। এটি শরীরের ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া বাড়িয়ে দেয়, ফলে ত্বকের লাবণ্য বাড়ে এবং পিম্পল, অ্যাকনে বা দাগ কমে আসে। রোজা ত্বককে পরিষ্কার রাখে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
৭. কিডনি ও লিভারের স্বাস্থ্য
রোজা শরীরের বিষাক্ত পদার্থ এবং টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। এতে কিডনি এবং লিভার ভালোভাবে কাজ করতে পারে এবং শরীরে কোনো ধরনের বিষাক্ত পদার্থ জমে না থাকে। কিডনি এবং লিভার সঠিকভাবে কাজ করলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলোও ভালো থাকে।
রোজা শুধু একটি ধর্মীয় অভ্যাস নয়, বরং এটি একটি শক্তিশালী হেলথ টুল। নিয়মিত রোজা রাখলে শারীরিক এবং মানসিক অনেক উপকার পাওয়া যায়। তবে, যারা কোনো স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য ডাক্তারি পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন, যাতে রোজার উপকারিতা সর্বাধিক হয়।
কানন