
ছবিঃ সংগ্রহীত
ফরজ রোজা কোনোভাবেই নফল ইবাদত দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়। যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে ফরজ রোজা ভঙ্গ করেন, তারা সারাজীবন নফল রোজা রাখলেও সেই একটি ফরজের সমতুল্য হবে না। ইসলামের বিধান অনুযায়ী, একটি ফরজ ইবাদতের মূল্য লক্ষ কোটি নফল ইবাদতের চেয়েও বেশি। তাই কেউ ফরজ রোজা পরিত্যাগ করে দান-সদকা বা অন্যান্য নফল আমল করলেও, তা দিয়ে তার ফরজ রোজার ঘাটতি পূরণ হবে না।
তবে শরীয়ত বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছু ব্যতিক্রম রেখেছে। বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, অসুস্থ ব্যক্তি, বা যারা ভবিষ্যতে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা নেই—এমন ব্যক্তিদের জন্য রোজার পরিবর্তে 'ফিদিয়া' দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। ফিদিয়া হলো, প্রতিটি রোজার পরিবর্তে একজন গরীব মানুষকে ইফতারসহ তিন বেলা আহার করানো। কেউ চাইলে এক গরীবকে পুরো রমজান মাস বা প্রতিদিন আলাদা গরীব ব্যক্তিকে আহার করাতে পারেন। শরীয়তের এই নিয়ম অসুস্থ ও অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ অনুকম্পা হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে।
রমজানের মূল শিক্ষা হলো আত্মশুদ্ধি, কোরআন তেলাওয়াত, বেশি বেশি ইবাদত, দান-সদকা ও তাসকিয়া অর্জন। মুসলমানদের উচিত কোরআন শুধু তেলাওয়াত করাই নয়, বরং এর অর্থ বোঝার চেষ্টা করা, তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা, জিকির ও ইস্তেগফারে মনোযোগী হওয়া। পাশাপাশি, যাদের আর্থিক সচ্ছলতা আছে, তাদের উচিত আত্মীয়স্বজন ও গরীব-দুঃখীদের প্রতি খেয়াল রাখা।
অনেকে বারবার নফল হজ ও ওমরাহ করেন, যা প্রশংসনীয় হলেও, যদি সেই অর্থ আত্মীয়স্বজন, গরীব-দুঃখী, এবং দ্বীনের প্রচার ও প্রসারের জন্য ব্যয় করা হয়, তবে তার সওয়াব অনেক গুণ বেশি হবে। কারণ, অভাবের কারণে অনেক মানুষ কুফরের দিকে চলে যায়, অথচ সঠিক সময়ে সহযোগিতা পেলে তারা দ্বীনের পথে থাকতে পারে। তাই, ফরজ ও ওয়াজিব খাতে অর্থ ব্যয় করাই উত্তম এবং এটি নফল হজ বা ওমরাহর চেয়েও অধিক সওয়াবের কাজ।
এ কারণে, ইসলামী চিন্তাবিদরা মনে করেন, বারবার নফল হজ ও ওমরাহ করার পরিবর্তে, সেই অর্থ গরীবদের কল্যাণে ব্যয় করাই অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের মূলনীতি অনুসারে, ফরজ পালন করা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, যা কোনোভাবেই নফল ইবাদত দ্বারা পূরণ করা সম্ভব নয়।
ইমরান