ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৯ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১

সেহরি না খেয়ে রোজা রাখা যাবে?

প্রকাশিত: ০০:৩১, ৯ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০১:২৯, ৯ মার্চ ২০২৫

সেহরি না খেয়ে রোজা রাখা যাবে?

ছবি: সংগৃহীত

রমজান মাসে সেহরী খাওয়া সুন্নত। এটি শুধুমাত্র শরীরের জন্য উপকারীই নয়, বরং রাসূল (সা.)-এর অনুসৃত পথও বটে। কিন্তু কেউ যদি সেহরী না খেয়েও রোযা রাখতে চায়, তাহলে কি তার রোযা সহিহ হবে? এ বিষয়ে কুরআন ও হাদিসের নির্দেশনা কী?

সেহরীর গুরুত্ব ও ফজিলত

রাসূলুল্লাহ (সা.) সেহরী খাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে—

"সেহরী খাও, কেননা সেহরীতে বরকত রয়েছে।" (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯২৩)

এছাড়া রাসূল (সা.) আরও বলেন—

"আমাদের ও আহলে কিতাবের রোযার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহরী খাওয়া।" (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১০৯৬)

অর্থাৎ, সেহরী খাওয়ার মাধ্যমে মুসলমানদের রোযা অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর থেকে পৃথক হয় এবং এটি ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

সেহরী না খেলে রোযার বিধান

সেহরী খাওয়া সুন্নত, ফরজ নয়। তাই কেউ যদি সেহরী ছাড়া রোযার নিয়ত করে, তাহলে তার রোযা সহিহ হবে। তবে এতে শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং ইবাদতে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হতে পারে।

প্রখ্যাত ইসলামি বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ এ বিষয়ে বলেন—

"সেহরী খাওয়া সুন্নত, এটি না খেলে রোযা সহিহ হবে, তবে রাসূল (সা.) আমাদের জন্য যা সুন্নত করে দিয়েছেন, তা মেনে চলাই উত্তম। বিশেষ করে সেহরী খেলে সারাদিন রোযা রাখা তুলনামূলকভাবে সহজ হয়।"

অন্যদিকে, জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী বলেন—

"সেহরী মূলত একটি বরকতময় খাবার। এটি রোযাদারকে সারাদিনের জন্য প্রস্তুত করে এবং শরীরকে শক্তি জোগায়। সেহরী না খেয়েও রোযা রাখা যায়, তবে এতে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে এবং ইবাদতে মনোযোগ নষ্ট হতে পারে।"

সেহরী না খাওয়ার সম্ভাব্য ক্ষতি

১. সারাদিন পানিশূন্যতা ও দুর্বলতা অনুভূত হতে পারে।
২. দীর্ঘক্ষণ না খাওয়ার কারণে শরীরে এনার্জি ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
৩. ইবাদত ও দৈনন্দিন কাজকর্মে মনোযোগ কমে যেতে পারে।

ইসলামে সেহরী খাওয়া সুন্নত এবং এটি রোযাদারের জন্য কল্যাণকর। তবে কেউ যদি সেহরী ছাড়া রোযার নিয়ত করে, তাহলে তার রোযা সহিহ হবে, যদিও এটি কষ্টকর হতে পারে। তাই রাসূল (সা.)-এর সুন্নত মেনে সেহরী খাওয়াই উত্তম।

আসিফ

×