ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৬ মার্চ ২০২৫, ২১ ফাল্গুন ১৪৩১

রমজানে তাকওয়া অর্জনের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য

প্রকাশিত: ১০:২৪, ৫ মার্চ ২০২৫

রমজানে তাকওয়া অর্জনের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য

রমজান মাস মুসলমানদের জন্য একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ মাস, যা আল্লাহর নৈকট্য লাভ, গুনাহ মাফ এবং সওয়াব অর্জনের সর্বোত্তম সময়। এই মাস রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। রমজানে সময়ের বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে মুসলিমরা নিজেদের আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: "হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় করো এবং মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।" (সূরা আলে ইমরান: ১০২)

তাকওয়ার প্রকৃত অর্থ ও গুরুত্ব

তাকওয়া বলতে বোঝায় আল্লাহভীতি এবং তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা। পরকালের ক্ষতিকর বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকার নামই প্রকৃত তাকওয়া। মহানবী (সা.)-এর এক সাহাবী উবাই (রা.)-কে যখন ওমর (রা.) তাকওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি উত্তরে বলেন, "একজন ব্যক্তি যখন কাঁটাযুক্ত পথে চলেন, তখন তিনি সতর্কতার সাথে হাঁটেন যেন কাঁটা তার গায়ে না লাগে। তাকওয়াও তেমনই; এটি এমনভাবে চলা যাতে ঈমান ও আমলের ক্ষতি না হয়।"

তাকওয়ার প্রকারভেদ

তাকওয়া তিন প্রকার হতে পারে:
১. শিরক থেকে বেঁচে থাকা - এটি ঈমানের মূল ভিত্তি।
২. কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকা - বড় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকলে ঈমানের দৃঢ়তা বৃদ্ধি পায়।
৩. সাধারণ অনুচিত কাজ থেকেও দূরে থাকা - এটি মুমিনের চরিত্রকে পরিশুদ্ধ করে এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সহায়ক হয়।

তাকওয়ার দুনিয়াবি ও পরকালীন সফলতা

তাকওয়ার মাধ্যমে একজন মুমিন দুনিয়া ও আখেরাতে সফল হতে পারে। কোরআন ও হাদিসে তাকওয়ার অসংখ্য উপকারিতা বর্ণিত হয়েছে:

কাজের সহজতা: "যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য সহজতা দান করেন।" (সূরা তালাক: ৪)

শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা: "যখন মুত্তাকীদের শয়তান স্পর্শ করে, তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তারা সুস্পষ্টভাবে দেখতে পায়।" (সূরা আ'রাফ: ২০১)

রিজিকের প্রশস্ততা: "যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য অপ্রত্যাশিত রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন।" (সূরা তালাক: ৩)

আল্লাহর ওলি হওয়া: "মুত্তাকীগণই আল্লাহর ওলি।" (সূরা ইউনুস: ৬২)

জ্ঞান বৃদ্ধি: "তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তিনি তোমাদের জ্ঞান দান করবেন।" (সূরা বাকারা: ২৮২)

আখেরাতে জান্নাত লাভ: "আমি এই জান্নাতের উত্তরাধিকার মুত্তাকীদের বানাবো।" (সূরা মারইয়াম: ৬৩)

রমজান মাস হচ্ছে তাকওয়া অর্জনের শ্রেষ্ঠ সময়। এই মাসের প্রতিটি ইবাদতই আল্লাহর কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য। তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে একজন মুমিন পরিশুদ্ধ জীবনযাপন করতে পারে, যা তাকে দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতার দিকে নিয়ে যায়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে পরিপূর্ণ তাকওয়া অর্জন করার তৌফিক দান করুন। 

সূত্র : https://www.youtube.com/watch?v=bRTCDKs5TuY

রাজু

×