
ছবি সংগৃহীত
রমজান মাস ঈমানদারদের জন্য এক পরম নেয়ামত ও সৌভাগ্যের মাস। সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির এক অনন্য সুযোগ এনে দেয় এই মাস। দিনের বেলায় পানাহার থেকে বিরত থেকে সুবহে সাদিকের আগে সেহরি খেয়ে রোজার প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
নবীজি তার সাহাবিদের রমজানের সুসংবাদ শোনাতেন। রমজানের ফজিলতের কথা বলতেন। ইবাদত ও সাধনায় মনোযোগী হওয়ার উপদেশ দিতেন। অধিক পরিমাণে নেকি অর্জনে উৎসাহ জোগাতেন।
এই বিশেষ সময়ে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.) কেমন সেহরি করতেন? কীভাবে কেটেছিলো তার রমজানের দিনরাত?
নবীজির (সা:) সেহরির অভ্যাস
নবীজি (সা.) ছিলেন এক অনাড়ম্বর জীবনধারার অনুসারী। তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সরলতা ও সাধারনত্বের ছাপ ছিল স্পষ্ট। খাবারের ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন সংযমী ও পরিমিতি বোধসম্পন্ন। রমজানের সময়ও তার এই স্বভাব অপরিবর্তিত ছিল।
সেহরির খাবার হিসেবে তিনি বিশেষ কিছু খেতেন না, বরং যা ঘরে থাকত, তাই গ্রহণ করতেন। তবে খেজুর ছিল তার অন্যতম প্রিয় খাবার।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, "উত্তম সেহরি হলো খেজুর, আর উত্তম তরকারি হলো সিরকা। আল্লাহ সেহরি গ্রহণকারীদের প্রতি দয়া করুন।" (কানজুল উম্মাল: ২৩৯৮৩)
নবীজি (সা.) শুধু নিজেই সেহরি গ্রহণ করতেন না, বরং সাহাবীদেরও এটি গ্রহণে উৎসাহিত করতেন। তিনি বলতেন, "তোমরা সেহরি গ্রহণ কর, কেননা সেহরিতে বরকত রয়েছে।" (বুখারি: ১৯২৩, মুসলিম: ১০৯৫)
এমনকি সামান্য কিছু খাবার বা এক ঢোক পানি পেলেও সেহরি করার পরামর্শ দিতেন। হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "হে আল্লাহ! আপনি আমার উম্মতের সেহরিতে বরকত দিন। তোমরা সেহরি গ্রহণ কর এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও, একটি খেজুর দিয়ে হলেও, কিছু আঙুরের দানা দিয়ে হলেও। নিশ্চয়ই ফেরেশতারা তোমাদের জন্য শান্তির দোয়া করে।" (জামে সুয়ুতি : ৫০৭০)
নবীজি (সা.) সেহরি খেতেন রাতের শেষ ভাগে, সুবহে সাদিকের ঠিক আগমুহূর্তে। হজরত যায়েদ বিন সাবেত (রা.) বলেন, "আমরা আল্লাহর রাসুলের (সা.) সঙ্গে সেহরি খেতাম, এরপর তিনি সালাতের জন্য দাঁড়াতেন।"
একজন সাহাবী জিজ্ঞাসা করেন, "ফজরের আজান ও সেহরির মাঝে কতটুকু ব্যবধান ছিল?" তখন যায়েদ (রা.) বলেন, "প্রায় ৫০ আয়াত পাঠ করার সময়ের সমান।" (বুখারি: ১৯২১)
আশিক