
ছবি : জনকণ্ঠ
ইসলামের শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে কোমল ভাষা ও বিনয়ী আচরণের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও ইসলামী চিন্তাবিদ ড. তুহিন মালিক। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও সাহাবায়ে কেরামের নম্রতা, সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ এবং দাওয়াত প্রদানের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি লেখেন, “মানুষ ইসলামের শান্তির ছায়াতলে এসেছে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও সাহাবায়ে কেরামের বিনয়-নম্রতা, অমায়িক ব্যবহার, সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ও কোমলভাষী হওয়ার কারণে। একজন দাঈ ইলাল্লাহ-এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গুণ হলো কোমলভাষী হওয়া, বিনয়ী আচরণ করা এবং নিজের বড়ত্ব প্রদর্শন না করা।”
ড. তুহিন মালিক কুরআনের বিভিন্ন আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন, আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে নির্দেশ দিয়েছেন কোমল হৃদয়ের হতে। তিনি সুরা আল ইমরানের ১৫৯ নম্বর আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন, “আল্লাহর অনুগ্রহে আপনি তাদের প্রতি কোমল হৃদয় হয়েছিলেন; যদি রূঢ় ও কঠোরচিত্ত হতেন, তবে তারা আপনার আশপাশ হতে দূরে সরে পড়ত। সুতরাং আপনি তাদের ক্ষমা করুন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আর কাজকর্মে তাদের সাথে পরামর্শ করুন। অতঃপর কোন সংকল্প করলে আল্লাহর উপর ভরসা করুন, ভরসাকারীদের আল্লাহ ভালোবাসেন।”
এছাড়াও, তিনি সুরা নাহলের ১২৫ নম্বর আয়াত উল্লেখ করে বলেন, “আপনি আপনার প্রতিপালকের পথে মানুষকে আহ্বান করুন হিকমত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে তর্ক করুন উত্তম পন্থায়। নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তাই সবিশেষ জ্ঞাত রয়েছেন তার সম্পর্কে, যে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং তিনি অবহিত আছেন, কারা সঠিক পথে আছে।”
ফেরাউনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম জঘন্য পাপিষ্ঠ ব্যক্তি ছিল ফেরাউন, যে নিজেকে সর্বোচ্চ প্রভু বলে দাবি করেছিল। তবুও, আল্লাহ তাআলা নবী মূসা (আঃ)-কে তার কাছে নম্র ভাষায় ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তিনি সুরা ত্বা-হার ৪৩-৪৪ নম্বর আয়াত উল্লেখ করে বলেন, “তোমরা উভয়ে ফেরাউনের কাছে যাও, সে খুব উদ্ধত হয়ে গেছে। অতঃপর তোমরা তার সাথে নম্রভাষায় কথা বল, হয়তো সে উপদেশ গ্রহণ করবে অথবা ভীত হবে।”
ড. তুহিন মালিক বলেন, ইসলামের দাওয়াত ও শিক্ষা মানুষের হৃদয়ে প্রভাব ফেলতে হলে কোমল ভাষা, ধৈর্য এবং সদুপদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কঠোরতা ও রূঢ় আচরণ মানুষকে ইসলামের সুমহান আদর্শ থেকে দূরে সরিয়ে দিতে পারে। তিনি দাঈ ও ধর্মপ্রচারকদের উদ্দেশে আহ্বান জানান, তারা যেন ধৈর্য, নম্রতা ও প্রজ্ঞার সঙ্গে মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেন।
মো. মহিউদ্দিন