ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১

যে ৫টি কাজ করলে সারাদিন রোজার কোন ক্লান্তি অনুভব হবে না

প্রকাশিত: ১৮:৪৪, ২ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১৮:৪৯, ২ মার্চ ২০২৫

যে ৫টি কাজ করলে সারাদিন রোজার কোন ক্লান্তি অনুভব হবে না

ছবিঃ সংগৃহীত।

সারাদিন রোজা রাখার ফলে শরীরে ক্লান্তি এবং দুর্বলতা অনুভূত হতে পারে, তবে কিছু উপায় অনুসরণ করলে এই ক্লান্তি কমানো সম্ভব। রোজার সময় শরীরের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করলে রোজার সময় ক্লান্তি অনেকটাই দূর করা যায়।

১. সঠিকভাবে সাহরি খাওয়া
সাহরি হল রোজার প্রথম খাবার, যা রোজা রাখতে সহায়ক। সাহরি খাওয়ার সময় এমন খাবার গ্রহণ করা উচিত যা ধীরে ধীরে হজম হয় এবং শক্তি বজায় রাখে। সাহরিতে আপনি সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে পারেন, যেমন: ডিম, দুধ, দই, মাংস, মিষ্টি আলু। ফাইবার: শাক-সবজি, ফলমূল (বিশেষ করে পানি সমৃদ্ধ ফল যেমন তরমুজ, খেজুর)। পর্যাপ্ত পানি পান করুন যাতে সারাদিন শরীর হাইড্রেটেড থাকে। সাহরি খাওয়ার পর, আপনি যদি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করেন, তবে রোজা রাখার সময় শরীরে শক্তির অভাব হবে না এবং ক্লান্তিও অনেক কম অনুভূত হবে।

২. ইফতারে সঠিক খাবারের নির্বাচন
ইফতার বা রোজা ভাঙার সময়ও সঠিক খাবার নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইফতারে অতিরিক্ত তেল, মশলা বা মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে শরীরের উপর চাপ বাড়তে পারে এবং পরবর্তীতে ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। খেজুর: রাসূল (সা.) খেজুর দিয়ে ইফতার করতে ভালোবাসতেন। এটি শরীরের জন্য দ্রুত শক্তির উৎস। শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে ইফতার করার পর পর্যাপ্ত পানি পান করুন। হালকা খাবার স্যুপ, ফলমূল, সালাদ এবং সুস্বাদু কিন্তু হালকা খাবার ইফতার হিসেবে গ্রহণ করুন।

৩. বিশ্রাম এবং ঘুম
সারাদিন রোজা রাখার কারণে শরীর ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে, তাই পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুম অত্যন্ত জরুরি। রোজার সময় সঠিক সময়ে ঘুমানো এবং বিশ্রাম নেওয়া ক্লান্তি কমানোর জন্য সহায়ক। আপনি যদি সাহরি খাওয়ার পরে একটু সময় নিয়ে বিশ্রাম নিতে পারেন, তবে সারাদিনের ক্লান্তি অনেকটা কমিয়ে দিতে পারবেন। এছাড়া, রোজার পর রাতের সময় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়াও কার্যকর।

৪. মাঝে মাঝে হালকা ব্যায়াম
সারাদিন রোজা রাখার সময় খুব বেশি শারীরিক পরিশ্রম করা উচিত নয়, তবে খুব হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে। এটি শরীরে শক্তি ও সতেজতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। হালকা ব্যায়াম, হাঁটাচলা, এক্সটেন্ডেড স্ট্রেচিং , পিলাটিস বা যোগব্যায়াম (যা শরীরকে নমনীয় এবং শক্তিশালী রাখে)। তবে মনে রাখবেন যে, ভারী ব্যায়াম রোজা রাখার সময় ক্লান্তি বাড়িয়ে দিতে পারে, তাই হালকা ব্যায়াম বা শারীরিক ক্রিয়াকলাপ নির্বাচন করা উচিত।

৫. মানসিক শান্তি বজায় রাখা
রোজার সময় মনোসংযোগ এবং মানসিক শান্তি বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা উদ্বেগ ক্লান্তি বাড়িয়ে দেয়, তাই সেসব থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করুন। নিয়মিত দোয়া, তাজকিরা, কোরআন তিলাওয়াত এবং ধ্যান মনকে প্রশান্তি দেয় এবং ক্লান্তি কাটাতে সাহায্য করে। সঠিকভাবে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গভীর করুন। কোরআন তিলাওয়াত, জিকির ও দোয়া করলে মানসিক শান্তি বজায় থাকে, যা রোজার ক্লান্তি কমাতে সহায়ক।

রোজার সময় ক্লান্তি কমানোর জন্য খাদ্যাভ্যাস, বিশ্রাম, হালকা ব্যায়াম এবং মানসিক শান্তি বজায় রাখার উপর গুরুত্ব দেয়া উচিত। সঠিক খাবার গ্রহণ এবং শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখার মাধ্যমে আপনি রোজা রাখার সময় ক্লান্তি কমাতে সক্ষম হবেন।

মুহাম্মদ ওমর ফারুক

×