ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৮ ফাল্গুন ১৪৩১

যেসব ভুলে রোজায় কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হতে পারে

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০৫:২৯, ২ মার্চ ২০২৫

যেসব ভুলে রোজায় কাযা ও কাফফারা  ওয়াজিব হতে পারে

সংগৃহীত

রোজা (সাওম) শব্দের অর্থ হলো বিরত থাকা। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায়, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নির্দিষ্ট নিয়মে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার, যৌন সম্পর্ক এবং রোজা ভঙ্গকারী কাজ থেকে বিরত থাকার নাম রোজা।

প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, মুসলিম নর-নারীর জন্য রোজা রাখা আবশ্যক। শুধুমাত্র পানাহার থেকে বিরত থাকালেই রোজা আদায় হয়ে যায় না; বরং রোজা অবস্থায় মেনে চলতে হয় বেশ কিছু নিয়মকানুনও। আল্লাহ তায়ালা রোজাদারকে তিনটি বিষয় থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।

১. স্ত্রী-সহবাস, ২. খাবার গ্রহণ, ৩. পানীয় গ্রহণ। (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)

সাওম পালনকারী ব্যক্তি ইচ্ছাপূর্বক সহবাস করলে তার উপর কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হয়। এতে বীর্য নির্গত হওয়া শর্ত নয়। এ ব্যাপারে মহিলাও যদি ইচ্ছুক ও অনুগত থাকে তবে তার উপরও কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে। অনিচ্ছুক মহিলার সাথে জোরপূর্বক সহবাস করা হলে এরূপ মহিলার উপর কেবল কাযা ওয়াজিব হবে।


এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, "হে আল্লাহর রাসুল! আমি রমজান মাসে দিনের বেলায় স্ত্রী সহবাস করেছি।"
রাসুল (সা.) বললেন, "তোমার কি একটি ক্রীতদাস মুক্ত করার সামর্থ্য আছে?" সে বলল, না। তিনি বললেন, "তাহলে টানা দুই মাস রোজা রাখতে হবে।"
সে বলল, আমি তা পারব না। তিনি বললেন,  "তাহলে ৬০ জন দরিদ্রকে খাওয়াতে হবে।"

— (সহিহ বুখারি: ১৯৩৬, সহিহ মুসলিম: ১১১১)
 

সাওম পালনকারী ব্যক্তি যদি খাদ্যদ্রব্য বা ঔষুধ ইচ্ছাপূর্বক গ্রহণ করে তবে তার উপর কাফফারা ও কাযা ওয়াজিব হবে। সুতরাং সাওম পালনকারী ব্যক্তিটি যদি রুটি, খাদ্যজাত দ্রব্যাদি, ফল-ফলাদি, পানি ও পানীয় বস্তু, তেল, দুধ, মিশক, জাফরান বা কর্পূর খেয়ে ফেলে তবে তার উপর কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে।যদি কেউ ভুলবশত খাওয়া, পান করা বা অন্য কোনো কারণে রোজা ভঙ্গ করে, তবে শুধু কাযা করতে হবে, কাফফারা নয়।

 

রাসুল (সা.) বলেন, "যে ব্যক্তি ভুলক্রমে খেয়ে ফেলে, সে যেন তার রোজা পূর্ণ করে। কারণ, এটিকে আল্লাহ তাকে খাইয়েছেন।"
— (সহিহ বুখারি: ৬৬৬৯, সহিহ মুসলিম: ১১৫৫)

 

কেউ রক্ত পান করলে যাহিরী রিওয়ায়েত মতে, কাযা ওয়াজিব হবে, কাফফারা ওয়াজিব হবে না। কিন্তু রক্ত পানে অভ্যস্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে।

 

সুবহে সাদিক না হওয়ার পূর্ণ বিশ্বাসের উপর কেউ সাহরি খেল অথচ তখন সুবহে সাদিক হয়ে গিয়েছে অথবা সূর্য অস্তমিত হওয়ার পূর্ণ বিশ্বাসের উপর ইফতার করল কিন্তু আসলে তখন সূর্য অস্ত যায়নি এ অবস্থায় এ লোকের উপর কাযা ওয়াজিব হবে, কাফফারা ওয়াজিব হবে না। সুবহে সাদিক হওয়ার প্রবল ধারণা সত্ত্বেও কেউ সাহরি খেয়ে নিলে তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে। আর সূর্য অস্ত না যাওয়ার প্রবল ধারণা সত্ত্বেও কেউ ইফতার করে ফেললে তার উপর কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে।

এছাড়া, একটি সাওম ভেঙে ফেলার পর কেউ যদি এর কাফফারা আদায় করার পূর্বে আরেকটি সাওম ভেঙে ফেলে তবুও তার উপর একটি মাত্র কাফফারা ওয়াজিব হবে। কেউ যদি দুই রমাদানে দুটি সাওম ভঙ্গ করে তবে তার উপর প্রতি সাওম ভঙ্গের জন্য একটি করে কাফফারা ওয়াজিব হবে।
 

আফিয়া


 

×