ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০১ মার্চ ২০২৫, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১

রমজানে ইফতারি কেমন হওয়া উচিৎ? 

self

প্রকাশিত: ১৫:৫৩, ১ মার্চ ২০২৫

রমজানে ইফতারি কেমন হওয়া উচিৎ? 

সংগৃহীত

রমজান মাস উপবাস পালনের মাস। যাতে ধনীরা অভাবী মানুষের ক্ষুধার যন্ত্রণা উপলব্ধি করতে পারেন। কিন্তু আমরা রমজানকে ভোজের আয়োজনে পরিণত করি। পানাহারের প্রতি এত বেশি মনোযোগী হই, যাতে ইবাদতে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। সামর্থ্যবানেরা এত বেশি বাজার করেন, এতে গরিব মানুষ কেনার সুযোগ পায় না, যা রমজানের শিক্ষার ও উদ্দেশ্যের পরিপন্থী।

সহমর্মিতার এ মাসে আমাদের আশপাশে প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজন যাঁরা অভাবী আছেন, তাঁদের ইফতার ও সাহরির ব্যবস্থা করা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব।

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘সে ব্যক্তি পরিপূর্ণ ইমানদার নয়, যে পেট ভরে আহার করে আর তার প্রতিবেশী অনাহারে থাকে (মুসলিম)।


রমজান মাস এলে বিকাল বেলা থেকেই ইফতারের জন্য নানা খাবার তৈরি ও বিক্রির হিড়িক পড়ে। হরেক রকম ইফতারির পসরা সাজিয়ে দোকানিরা রাস্তার ধারে ফুটপাতে, অলিতে-গলিতে, হাটে-বাজারে বসে যায়। এসব ইফতারির মধ্যে রয়েছে ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনি, ডালবরা, সবজি বরা, আলুর চপ, খোলা খেজুর, হালিম, জালি কাবাব, জিলাপি, বুইন্দা ইত্যাদি। আরও রয়েছে বিভিন্ন ফল ও ফলের রস, আখের গুড়ের শরবত, নানা রংমিশ্রিত বাহারি শরবত। তাছাড়া মুখরোচক বিরিয়ানি ও তেহারি তো আছেই।

এখন প্রশ্ন হলো—এসব মুখরোচক খাবার স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি করা হয়েছে কিনা? ভেজাল তেল, বেসন ও কৃত্রিম রং মেশানো হয়েছে কিনা সেদিকে নজর দেয়া উচিৎ । যে তেলে ভাজা হয় সেই তেল একবারের বেশি ব্যবহার উচিৎ নয়। কারণ একই তেল বার বার আগুনে ফুটালে কয়েক ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য তৈরি হয়। যেমন—একই তেল বার বার ব্যবহৃত হলে তা থেকে পলি নিউক্লিয়ার হাইড্রোকার্বন তৈরি হয়। যার মধ্যে বেনজা পাইরিন নামক ক্যান্সার হতে পারে এমন পদার্থের মাত্রা বেশি থাকে। তাছাড়া অপরিষ্কারভাবে ইফতারি তৈরি করলে পেটের পীড়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সুস্থভাবে বাঁচার জন্য যত্রতত্র খোলা খাবার সুস্থভাবে বাঁচার জন্য যত্রতত্র খোলা খাবার না খাওয়াই উচিত।

খুব কম ফলই পাওয়া যাবে যা ভেজালমুক্ত। শরবতের কথা তো বলাই বাহুল্য। রাস্তা-ঘাটে, হাটে-বাজারে রকমারি শরবত তৈরি করা হয়। আমাদের জানতে হবে, এসব শরবত যে পানি দিয়ে বানানো হয় সে পানি বিশুদ্ধ কি-না। তাছাড়া ইফতারের জন্য তৈরি প্রায় সব খাবার তেল ও উচ্চ চর্বিযুক্ত। সাধারণত অধিক মুনাফার আশায় এসব খাবার মানসম্মত তেলে এবং সঠিক নিয়মে ভাজা হয় না, তাই এসব স্বাস্থ্যসম্মত নয়।

একজন রোজাদার ইফতারে কী খাবেন তা নির্ভর করবে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ও বয়সের ওপর। এখানে উল্লেখ্য যে, পারতপক্ষে দোকানের তৈরি ইফতারি ও সাহরি না খাওয়াই ভালো। সুস্থ স্বাস্থ্যবান রোজাদারের জন্য ইফতারিতে খেজুর বা খুরমা, ঘরের তৈরি বিশুদ্ধ শরবত, কচি শসা, পেঁয়াজু, বুট, ফরমালিন অথবা ক্যালসিয়াম কার্বাইডমুক্ত মৌসুমি ফল থাকা ভালো। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খেতে হবে।

 

×