
ছবি: সংগৃহীত
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম রোজা শুধুমাত্র আত্মশুদ্ধির মাধ্যম নয়, বৈজ্ঞানিকভাবেও এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, রোজার মাধ্যমে শরীরে এক ধরনের প্রক্রিয়া সক্রিয় হয়, যাকে বলা হয় "অটোফেজি"। এটি কোষের নিজস্ব পরিশোধন ব্যবস্থা, যা পুরনো বা ক্ষতিগ্রস্ত কোষীয় উপাদান পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে দেহকে পুনর্গঠিত করে।
জাপানি বিজ্ঞানী ইউশিনুরি ওসুমি ২০১৬ সালে তাঁর গবেষণার মাধ্যমে অটোফেজি প্রক্রিয়াকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন, যার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রোজা রাখার ফলে খাবারের সরবরাহ কমে গেলে শরীর অটোফেজি সক্রিয় করে, যার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ও অপ্রয়োজনীয় প্রোটিন ও কোষীয় আবর্জনা ভেঙে শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। সাধারণত, ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা না খেলে শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা কমে যায় এবং কোষ নিজেই অপ্রয়োজনীয় অংশ হজম করতে শুরু করে, যা সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য উন্নত করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, অটোফেজি শরীরের বিভিন্ন উপকার সাধন করে। এটি কোষের বর্জ্য ও ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গাণু অপসারণ করে, ফলে কোষ আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। সঠিকভাবে অটোফেজি কার্যকর হলে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে, শরীর দীর্ঘদিন তরুণ ও কর্মক্ষম থাকে। এটি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এছাড়া, পারকিনসনস ও আলঝেইমারের মতো রোগের প্রধান কারণ কোষে ক্ষতিকর প্রোটিনের অস্বাভাবিক জমাট বাঁধা, যা অটোফেজি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দূর হয়ে নিউরনের সুস্থতা বজায় থাকে। অটোফেজি কোষ বিভাজন ও অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধির উপর নিয়ন্ত্রণ রাখে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
রোজার সময় শরীর সঞ্চিত উপাদানকে পুনর্ব্যবহার করে শক্তি উৎপাদন করে, যা দেহকে টিকে থাকতে সাহায্য করে। ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ বন্ধ রাখার ফলে অটোফেজি সক্রিয় হয় এবং দেহের সুস্থতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। এটি দীর্ঘায়ুতা ও রোগ প্রতিরোধের জন্য একটি স্বাভাবিক ও কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/WZkKys5cHqc?si=k8Gey8iwSMLJ1hlp
এম.কে.