ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১

মওইনুদ্দিন চিশতী: এক অতুলনীয় আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শক

প্রকাশিত: ১৫:২০, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মওইনুদ্দিন চিশতী: এক অতুলনীয় আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শক

ছ‌বি: উইকিপিডিয়া

আধ্যাত্মিকতার আলো ছড়ানো মহাপুরুষদের মধ্যে খাজা মওইনুদ্দিন চিশতী (র.) ছিলেন এক অনন্য পথপ্রদর্শক। তিনি শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধের প্রচার ও প্রসারে রেখেছেন অবিস্মরণীয় অবদান। তাঁর জীবন ও কর্ম আজও কোটি কোটি মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে রয়েছে।

আধ্যাত্মিক জীবন ও শিক্ষা
মওইনুদ্দিন চিশতী (র.) জন্মগ্রহণ করেন ১১৪২ খ্রিস্টাব্দে পারস্যের সিস্তান অঞ্চলে। শৈশবেই তিনি পিতামাতাকে হারান এবং পরবর্তীতে আধ্যাত্মিক শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তরুণ বয়সেই তিনি সুফি সাধনার পথ বেছে নেন এবং নানা স্থানে ঘুরে আধ্যাত্মিক জ্ঞান আহরণ করেন। পরবর্তীকালে তিনি চিশতিয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

ভারতে সুফিবাদের প্রসার
মওইনুদ্দিন চিশতী (র.) ১২তম শতাব্দীতে ভারতে আসেন এবং আজমিরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনি তার সহজ-সরল জীবনযাপন ও অপার মানবসেবার মাধ্যমে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের মন জয় করতে সক্ষম হন। তার আধ্যাত্মিক শিক্ষা ও দর্শন কেবল ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেই নয়, বরং সব ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেও গভীর প্রভাব ফেলেছে।

সমাজসেবা ও মানবকল্যাণ
তিনি শুধুমাত্র ধর্ম প্রচারে মনোনিবেশ করেননি; বরং মানবকল্যাণমূলক কাজেও ছিলেন অগ্রগামী। দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের জন্য তার দরগাহ সব সময় উন্মুক্ত ছিল। তিনি ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও সহিষ্ণুতার বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, যা আজকের সমাজেও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।

চিরন্তন প্রভাব
খাজা মওইনুদ্দিন চিশতী (র.)-এর শিক্ষা ও দর্শন আজও কোটি কোটি মানুষের জীবনে আলো ছড়াচ্ছে। তার দরগাহ আজমির শরিফে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ ভক্তের আগমন ঘটে, যারা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকেন।

মওইনুদ্দিন চিশতী (র.) শুধুমাত্র একজন সুফি সাধক ছিলেন না; তিনি ছিলেন মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার জীবন ও দর্শন যুগে যুগে মানুষকে ভালোবাসা, সহিষ্ণুতা ও মানবকল্যাণের পথে পরিচালিত করবে।

শরিফুল

×