
শবে বরাত ফারসি শব্দ। ‘শব’ অর্থ রাত। আর ‘বরাত’ শব্দের অর্থ সৌভাগ্য। আরবিতে এই রাতকে বলে লাইলাতুল বরাত বা সৌভাগ্য রজনী। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, মহান আল্লাহ এ রাতে বান্দাদের গুনাহ মাফ করে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।
শবে বরাত উপলক্ষে রাসুলে আকরাম সা. দুটি জিনিস করার জন্য বলেছেন। এক. রাত জেগে আল্লাহর কাছে ইবাদত করা। যেমন–নফল নামাজ পড়া, কুরআন তিলাওয়াত করা, তাসবিহ পাঠ করা। দোয়া-দরুদ, তওবা-ইস্তেগফার ইত্যাদি পাঠ করা।
দুই. রোজা রাখা, নবী কারিম সা. গোটা শাবান মাস রোজা রাখতেন। তাই এ মাসে আমরা যত বেশি পারি রোজা রাখবো ইনশাআল্লাহ। বিশেষ করে আল্লাহর রসুল সা. বলেছেন, قوموا ليلها وصوموا نهارها এই রাত জেগে ইবাদত কর আর দিনে রোজা রাখ।
শবে বরাতের ফজিলত
শবে বরাত বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ রাত। এ রাতে আল্লাহ পাপী বান্দাদের মুক্তি দেন। মহানবী সা. বলেন, যখন শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাত আসবে, তখন তোমরা এ রাতে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে এবং দিনে রোজা পালন করবে। কেননা এই দিন সূর্যাস্তের পরই আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, ‘কে আছো ক্ষমাপ্রার্থনাকারী, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।
কে আছো রিজিকপ্রার্থী, আমি তাকে রিজিক দেব। কে আছো বিপদগ্রস্ত, আমি তাকে বিপদমুক্ত করব। ফজর হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা এ কথা বলতে থাকেন।’ (ইবন মাজাহ ১৩৮৮)
এ রাতে আল্লাহ বান্দাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। মহানবী সা. বলেন, এ রাতে আল্লাহ তাআলা বনু কালবের ছাগলগুলোর পশমের চেয়ে বেশিসংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করেন। (ইবন মাজাহ ১৩৮৯)
কিন্তু বিশেষ কিছু লোক এ ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হয়। মহানবী সা. বলেন, ‘শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাতে আল্লাহ তার সব বান্দাকে ক্ষমা করেন। তবে মুশরিক, হিংসুক, জাদুকর, ব্যভিচারী, মা-বাবার অবাধ্য সন্তান ও অন্যায়ভাবে হত্যাকারীকে ক্ষমা করেন না।’ (ইবন মাজাহ ১৩৯০) হাদিস শরিফে এ রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ তথা ‘শাবানের পনেরতম রজনী’ নামে অভিহিত করা হয়েছে।
এ রাতে যেহেতু গোনাহগারের গোনাহ মাফ হয় এবং অসংখ্য অপরাধীর অপরাধ ক্ষমা করা হয়, সেহেতু এ রাত মুসলমানদের মাঝে ‘শবে বরাত’ নামে প্রসিদ্ধ হয়েছে।
সজিব