![শবে বরাতে কি ভাগ্য নির্ধারিত হয়? শবে বরাতে কি ভাগ্য নির্ধারিত হয়?](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/19-2502120637.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
শবে বরাত ইসলামি পরিমণ্ডলে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত হিসেবে বিবেচিত হয়। এই রাতের ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। তবে, শবে বরাতকে ভাগ্য নির্ধারণের রাত হিসেবে গণ্য করা নিয়ে রয়েছে মতভেদ।
অনেকের মধ্যে ধারণা রয়েছে যে, শবে বরাতে পরবর্তী বছরের জন্য মানুষের জীবন-মৃত্যু, রিজিক ও ভাগ্যের অনুলিপি করা হয়। কিন্তু হাদিস বিশারদদের মতে, এই ধারণার পক্ষে কোনো সহিহ বা গ্রহণযোগ্য হাদিস পাওয়া যায় না। বরং এই বিষয়ে বর্ণিত হাদিসগুলো দুর্বল বা বানোয়াট বলে প্রমাণিত হয়েছে।
কোরআন কারিমে মহান আল্লাহ বলেন, "আমি তো তা অবতীর্ণ করেছি এক মুবারক রজনীতে এবং আমি তো সতর্ককারী। এ রজনীতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়।" (সূরা দুখান, আয়াত ৩-৪)।
তাবিয়ী ইকরিমাহ (রহ.) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, এখানে ‘মুবারক রজনী’ বলতে মধ্য শাবানের রাতকে বোঝানো হয়েছে এবং এই রাতে গোটা বছরের ফয়সালা নির্ধারিত হয়। তবে প্রখ্যাত তাফসিরবিদ ইমাম তাবারি (রহ.) ইকরিমাহর এই ব্যাখ্যাকে ভিত্তিহীন বলেছেন এবং উল্লেখ করেছেন যে, ‘মুবারক রজনী’ বলতে আসলে লাইলাতুল কদর বোঝানো হয়েছে।
তিনি বলেন, লাইলাতুল কদরেই কোরআন নাজিল হয়েছে এবং এটিকে অন্যত্র ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ বা বরকতময় রজনী বলা হয়েছে। এছাড়াও, কোরআনে উল্লেখ রয়েছে যে, কোরআন রমজান মাসে নাজিল হয়েছে, যা ইঙ্গিত করে যে ‘মুবারক রজনী’ রমজানের মধ্যেই রয়েছে, শাবানের নয়।
পরবর্তী মুফাসসিরগণও ইমাম তাবারীর ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। তাদের মতে, ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ ও ‘লাইলাতুল কদর’ একই রাতের দুটি উপাধি। ফলে শবে বরাতকে ভাগ্য নির্ধারণের রাত বলা যথাযথ নয়।
তবে, হাদিসের আলোকে এ রাতে নফল ইবাদত, কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া-দরুদ ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তাই শবে বরাতকে ইবাদতের জন্য বরকতময় মনে করলেও ভাগ্য নির্ধারণের রাত হিসেবে বিবেচনা করা সঠিক নয় বলে বিশ্লেষকগণ অভিমত দিয়েছেন।
এম.কে.