![যে চারটি আমল আপনাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করবে যে চারটি আমল আপনাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করবে](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/3-52-2502090133.jpg)
জীবনের নানা সময়ে আমাদের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়-পারিবারিক, আর্থিক, শারীরিক বা নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সমস্যা। নারী বা পুরুষ,যে-ই হোন না কেন, যখন মনে হবে আপনার পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, তখন কী করবেন?
অনেকেই পরীক্ষিত ও কার্যকর কিছু আমল করেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। অনেক বৃদ্ধ বাবা-মা, এমনকি ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীও এই আমল করেছেন এবং আশ্চর্যজনক উপকার পেয়েছেন। আমরা অনেক সময় ভাবি, আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করছেন না। কিন্তু হতে পারে, আমাদের আমলে কোনো ত্রুটি আছে, অথবা এই বিপদের মধ্যেই আমাদের জন্য কল্যাণ লুকিয়ে আছে। তাই আসুন, কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল ও দোয়া সম্পর্কে জানি, যা আমাদের কঠিন সময়ে আল্লাহর সাহায্য লাভের জন্য করা উচিত।
ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করা
যদি এমন পরিস্থিতিতে পড়েন যেখানে কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না, তাহলে ইস্তিগফার করা শুরু করুন। আল্লাহ বলেন,"যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করব। যে আমার কাছে কিছু চাইবে, আমি তাকে তা দেব।" ইস্তিগফার করা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার সর্বোত্তম উপায় এবং এটি আমাদের দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। প্রতিনিয়ত "আস্তাগফিরুল্লাহ" পড়ুন, কারণ এটি যেকোনো সময়, যেকোনো স্থানে পড়া যায়। বিশেষত ঘুমানোর আগে ও ফজরের পর বেশি করে ইস্তিগফার করলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় এবং বিপদ থেকে মুক্তির সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
নবী করিম (সা.)-এর প্রতি দুরূদ পাঠ করা
দুরূদ পাঠ করা একটি অলৌকিক আমল, যা অনেক মানুষকে কঠিন সময় থেকে উদ্ধার করেছে। এটি আল্লাহর রহমত ও শান্তি ডেকে আনে, দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম মাধ্যম এবং নবী (সা.)-এর সুপারিশ লাভের সুযোগ দেয়। দিনে অন্তত ১০০ বার ‘দুরূদ ইব্রাহিম’ বা ছোট দুরূদ পাঠ করা উচিত, যেমন-"সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম"।
এক সাহাবি নবীজিকে (সা.) বললেন, "আমি দোয়ার মাঝে কতটুকু সময় দুরূদ পড়ব?" নবী (সা.) বললেন"যত বেশি পড়বে, ততই ভালো।" সাহাবি বললেন"তাহলে আমি শুধু দুরূদই পাঠ করব।" নবী (সা.) বললেন"তাহলে তোমার জন্য সব চিন্তা-দুশ্চিন্তা দূর করে দেওয়া হবে।"
যারা কঠিন সময় পার করছেন, তারা নিয়মিত দুরূদ পড়লে মানসিক প্রশান্তি লাভ করতে পারেন।
দোয়ায়ে ইউনুস পড়া
নবী ইউনুস (আ.) যখন মাছের পেটে আটকা পড়েছিলেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন, সেটিই তার মুক্তির কারণ হয়েছিল। এই দোয়াটি হলো-"লা ইলা-হা ইল্লা আনতা সুবহা-নাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ্ জ্বালিমীন"।
এটি বিপদ থেকে মুক্তির জন্য অত্যন্ত কার্যকর এবং আল্লাহর কাছে সরাসরি সাহায্য চাওয়ার শক্তিশালী মাধ্যম। এই দোয়া পড়লে দুশ্চিন্তা ও বিপদ দূর হয় এবং অন্তরে প্রশান্তি আসে। এটি কষ্ট ও সংকট থেকে বের হওয়ার জন্য খুবই উপকারী, তাই এটি প্রতিদিন নিয়মিত পড়া উচিত।
আল্লাহর জালাল ও সম্মানের দোয়া
আল্লাহ তাআলার কাছে নিজের কষ্ট ও সমস্যার কথা তুলে ধরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহর ক্ষমতা, প্রতাপ, জালাল ও সম্মানের কথা স্মরণ করে তার কাছে সাহায্য চাওয়া হলে, তিনি নিশ্চয়ই রহমত বর্ষণ করবেন। যখন কোনো কঠিন বিপদে পড়বেন, তখন এই দোয়াটি পড়তে পারেন-"ইয়া জলালু ওয়া ইকরাম, ইয়া আরহামার রাহিমিন, ইয়া মালিকাল মুলক"।
এটি আল্লাহর বিশেষ গুণাবলি স্মরণ করিয়ে দেয় এবং দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। পাশাপাশি, কঠিন সময়েও আল্লাহর ওপর আস্থা রাখার শক্তি জোগায়। যারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, তারা এই দোয়া নিয়মিত পড়লে মানসিক স্বস্তি ও বিপদ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
আমরা অনেক সময় বিপদে পড়ে হতাশ হয়ে যাই, কিন্তু মহান আল্লাহ আমাদের জন্য সর্বদা উত্তম পরিকল্পনা করেন। ইস্তিগফার, দুরূদ পাঠ, ইউনুস (আ.)-এর দোয়া, তাহাজ্জুদ নামাজ ও আল্লাহর জালাল স্মরণ-এই আমলগুলো নিয়মিত করলে কঠিন সময়েও মানসিক শান্তি পাওয়া সম্ভব। আজই শুরু করুন! আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক আমাদের সবার ওপর। আমিন!
সূত্র:https://tinyurl.com/3efcbb9r
আফরোজা