ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১

তবে কি খুঁজে পাওয়া গেল কোরআনে বর্ণিত সামুদ জাতির ঘরবাড়ি?

প্রকাশিত: ০১:২২, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

তবে কি খুঁজে পাওয়া গেল কোরআনে বর্ণিত সামুদ জাতির ঘরবাড়ি?

ছবি: সংগৃহীত

প্রাচীন আরবের শক্তিশালী জাতিগুলোর মধ্যে সামুদ জাতি অন্যতম, যাদের সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ রয়েছে। বলা হয়, তারা পাহাড় কেটে ঘরবাড়ি নির্মাণ করত এবং নবী সালেহ (আ.)-এর প্রতি অবাধ্যতা প্রদর্শন করেছিল। এর ফলে আল্লাহ তাদের উপর শাস্তি পাঠান, যার ফলে তারা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়।

 

বহু গবেষক মনে করেন, কোরআনে বর্ণিত সামুদ জাতির ঘরবাড়ি জর্ডান ও সৌদি আরবের কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলো জর্ডানের পেট্রা এবং সৌদি আরবের মাদাইন সালেহ (আল-উলা)।

পেট্রা শহর, যা আধুনিক জর্ডানে অবস্থিত, লাল পাথরের পাহাড় কেটে নির্মিত এক ঐতিহাসিক শহর। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে এটি একটি নাবাতীয় সভ্যতার অংশ হিসেবে চিহ্নিত হলেও অনেক গবেষক মনে করেন, এর স্থাপত্য ও ধ্বংসের ধরণ সামুদ জাতির বিবরণের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। পেট্রার ঘরবাড়ি ও স্থাপত্য কাঠামো পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে, যা কোরআনে বর্ণিত সামুদ জাতির আবাসস্থলের বর্ণনার সঙ্গে মিলে যায়।

 

তবে এই মিল থাকা সত্ত্বেও কিছু বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। সামুদ জাতির সময়কাল কোরআন ও ইসলামী ঐতিহাসিক সূত্র অনুযায়ী যে সময়ের, তার সঙ্গে পেট্রার প্রত্নতাত্ত্বিক সময়ের পার্থক্য রয়েছে। পাশাপাশি, কোরআনে সামুদ জাতির ধ্বংসের কারণ হিসেবে আল্লাহর শাস্তির কথা বলা হলেও, পেট্রার ধ্বংসের কারণ হিসেবে ভূমিকম্প বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা বলা হয়।

আরেকটি সম্ভাব্য স্থান হলো মাদাইন সালেহ, যা আজকের সৌদি আরবে অবস্থিত। এখানে পাহাড় কেটে তৈরি বহু পুরনো ঘরবাড়ির নিদর্শন পাওয়া যায়, যা সামুদ জাতির স্থাপত্যের সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায়। ইসলামিক ঐতিহাসিকদের মতে, এটি হতে পারে সেই অঞ্চল যেখানে সামুদ জাতি বসবাস করত এবং যেখানে তারা শাস্তিপ্রাপ্ত হয়েছিল।

 

পেট্রা ও মাদাইন সালেহ—এই দুটি স্থানই কোরআনে বর্ণিত সামুদ জাতির সম্ভাব্য অবস্থান হিসেবে গবেষকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যদিও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা এখনও নিশ্চিত করে বলেনি যে এই স্থানগুলোর কোনোটি আসলেই সামুদ জাতির বাসস্থান ছিল, তবে এ বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। সামুদ জাতির ইতিহাস ও তাদের ধ্বংসের কাহিনি ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি নিয়ে আরও অনুসন্ধান ভবিষ্যতে নতুন তথ্য উন্মোচন করতে পারে।

 

 

তাবিব

×