ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র কুরআনের প্রতিটি সূরাই মানুষের জন্য দিকনির্দেশনা ও কল্যাণের বার্তা নিয়ে এসেছে। তবে বিশেষভাবে সুরা লোকমান এমন একটি সূরা, যেখানে জীবন পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা, পারিবারিক ও সামাজিক নীতিমালা এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের কথা বর্ণিত হয়েছে।
সুরা লোকমানের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা
বুদ্ধিমত্তা ও জ্ঞানের গুরুত্ব
সুরা লোকমানে বলা হয়েছে, আল্লাহ যে কাউকে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা (হিকমাহ) দান করেন, তিনি এক মহা নিয়ামত লাভ করেন। এটি প্রমাণ করে, একজন মানুষ যখন জ্ঞানের আলোতে জীবন পরিচালনা করে, তখন তার জীবন সহজ ও সফল হয়।
পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্ব
এই সূরায় আল্লাহ স্পষ্টভাবে বলেছেন, পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা এবং তাঁদের সাথে সদাচরণ করা ঈমানদারের কর্তব্য। একজন ব্যক্তি যদি তার পিতা-মাতাকে যথাযথ সম্মান ও ভালোবাসা দেখায়, তবে তার জীবনে বরকত নেমে আসে।
নম্রতা ও বিনয়ী হওয়া
সুরা লোকমানের একটি বিশেষ শিক্ষা হলো অহংকার ত্যাগ করা এবং বিনয়ী হওয়া। অহংকার মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়, কিন্তু নম্রতা ও ভদ্রতা মানুষের সম্মান বৃদ্ধি করে।
ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতা
জীবনে নানা চ্যালেঞ্জ আসতে পারে, তবে ধৈর্য ও আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এই সূরায় বলা হয়েছে, আল্লাহর দেওয়া নিয়ামতগুলোর জন্য কৃতজ্ঞ হলে তিনি আরও বেশি দান করেন।
আখিরাতের চিন্তা
সুরা লোকমান আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, এই পৃথিবী ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু আখিরাতের জীবন স্থায়ী। তাই পার্থিব লোভ-লালসার পেছনে না ছুটে সৎ পথে জীবন পরিচালনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সুরা লোকমান আমাদের জীবন বদলে দিতে পারে। যদি আমরা এই সূরার শিক্ষাগুলো বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করি, তাহলে আমাদের চরিত্র আরও উন্নত হবে, পারিবারিক সম্পর্ক মজবুত হবে, এবং সমাজে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। এটি আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, ধৈর্যশীল হতে শেখায় এবং সঠিক পথে চলার দিকনির্দেশনা দেয়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই সূরা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, প্রকৃত সফলতা দুনিয়ার নয়, বরং আখিরাতের জীবনে রয়েছে। সুরা লোকমান শুধু একটি ধর্মীয় শিক্ষা নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা।
শিলা ইসলাম