ছবি: সংগৃহীত।
রাতে ঘুমানোর আগে কিছু ভালো কাজ বা আমল করা, শুধু দেহের বিশ্রামই নয়, মন ও আত্মার শান্তি এবং শান্তি লাভের মাধ্যম হতে পারে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) বিভিন্ন আমল সম্পর্কে আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শান্তি, নিরাপত্তা এবং ঈমানের শক্তি আনে।
রাতে ঘুমানোর আগে যে ছয়টি আমল করা যেতে পারে, তা হল:
১. আয়াতুল কুরসি পড়া
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তুমি যখন শয্যা গ্রহণ করবে, তখন আয়াতুল কুরসি পড়বে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বদা তোমার জন্য একজন রক্ষক থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না।’ (বুখারি ২৩১১)
২. ইস্তেগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করা
রাতে ঘুমানোর আগে আল্লাহর কাছে নিজেকে ক্ষমা চাইতে হবে। ইস্তেগফার করার মাধ্যমে আমাদের পূর্বের ভুল ও পাপগুলো মাফ হয়ে যায় এবং আল্লাহর রহমত নেমে আসে। এতে মন শান্ত থাকে এবং ঘুমও ভাল হয়। বিশেষত, "আস্তাগফিরুল্লাহ" (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই) এই ছোট দোয়াটি নিয়মিত পাঠ করলে জীবনে অনেক শান্তি আসে।
৩. সুরা ইখলাস ও নাস-ফালাক পড়ে শরীরে ফুঁ দেওয়া
আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রাতে যখন বিছানায় যেতেন, তখন দুই হাত একত্র করে তাতে সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়ে ফুঁ দিতেন।
অতঃপর মাথা ও চেহারা থেকে শুরু করে যত দূর সম্ভব দেহে তিনবার দুই হাত বোলাতেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫০১৭)
৪. মুখে মিসওয়াক ব্যবহার করা
হাদীসে এসেছে, "মিসওয়াক ব্যবহার করা হলো সুন্নত এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।" রাতে ঘুমানোর আগে মিসওয়াক করলে মুখে তাজগী (শুদ্ধতা) আসে, এটি শরীরের জন্য উপকারী এবং ফুসফুসের জন্যও ভালো। মিসওয়াক ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি সুস্থ থাকতে পারেন এবং একটি পবিত্র অনুভূতি পাবেন।
৫. নিয়মিত সূরা মুলক পাঠ করা
নবী (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা মুলক (সূরা আল-মুলক) পাঠ করবে, তার জন্য মৃত্যু পর্যন্ত নিরাপত্তা থাকবে।" সূরা মুলক রাত্রে পাঠ করলে তা আমাদের অন্তরকে প্রশান্তি দেয় এবং মৃত্যু পর্যন্ত আল্লাহর বিশেষ আশ্রয় লাভের আশ্বাস প্রদান করে।
৬. ডান হাত গালের নিচে রেখে দোয়া পড়া
আল্লাহর রাসুল (সা.) যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন, তখন তার ডান হাত— তার গালের নীচে রাখতেন, তারপর এ দোয়াটি বলতেন—
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমু-তু ওয়া আহ্ইয়া
অর্থ : হে আল্লাহ্! আপনার নাম নিয়েই আমি মরছি (ঘুমাচ্ছি) এবং আপনার নাম নিয়েই জীবিত (জাগ্রত) হব। (বুখারি, হাদিস : ৬৩২৪)
এই ছয়টি আমল পালন করলে শুধু শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় না, বরং আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা এবং দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভের পথও সুগম হয়।
নুসরাত