ছবি: সংগৃহীত
জয়তুন এমন একটি ফল, যার গুরুত্ব শুধু পবিত্র কোরআনেই নয়, বরং আগের কিতাবগুলোতেও উল্লেখ রয়েছে। মহান আল্লাহ কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে এই ফলের প্রশংসা করেছেন এবং এটিকে বরকতময় গাছ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বিশেষ করে, সুরা ত্বিনের প্রথম আয়াতে আল্লাহ তায়ালা এর কসম খেয়েছেন।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আল্লাহ আসমানসমূহ ও জমিনের নুর। তাঁর নুরের উপমা একটি দীপাধারের মতো। ... প্রদীপটি বরকতময় জয়তুন গাছের তেল দ্বারা জ্বালানো হয়, যা পূর্ব দিকেরও নয় এবং পশ্চিম দিকেরও নয়।’ (সুরা নুর: ২৪)
এছাড়া কোরআনে আরো বলা হয়েছে, ‘আর এক বৃক্ষ যা সিনাই পাহাড় হতে উদ্গত হয়, যা আহারকারীদের জন্য তেল ও তরকারি উৎপন্ন করে।’ (সুরা মুমিনুন: ২০) তাফসিরবিদদের মতে, এখানে জয়তুন গাছের কথাই বলা হয়েছে।
প্রিয়নবী (সা.)-এর অন্যতম প্রিয় ফল ছিল জয়তুন। শুধু ফলই নয়, তিনি জয়তুনের তেলও ব্যবহার করতেন এবং সাহাবাদেরও এটি ব্যবহারের উপদেশ দিতেন। হজরত ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা জয়তুনের তেল খাও এবং তা শরীরে মালিশ করো। কেননা এটি বরকত ও প্রাচুর্যময় গাছের তেল।’ (তিরমিজি: ১৮৫১)
এছাড়া, আগের নবীগণও এই গাছের ফল ও তেল ব্যবহার করতেন। এমনকি, তাদের কেউ কেউ জয়তুন গাছের ডাল মেসওয়াক হিসেবে ব্যবহার করতেন। (আল মুজামুল আওসাত)
জয়তুন শুধু বরকতময় নয়, এটি স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও অত্যন্ত উপকারী। গবেষকদের মতে, জয়তুন ও এর তেল-
- রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমায়
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
- অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে
- স্মৃতিভ্রংশ (আলঝেইমার) প্রতিরোধ করে
- ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কোষের প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
- চুল ও দাড়ির যত্নে কার্যকর ভূমিকা রাখে
জয়তুনে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ই, আয়রন, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস ও আয়োডিন। এছাড়া, এটি যৌন স্বাস্থ্য ও প্রজনন প্রক্রিয়াতেও সহায়ক ভূমিকা রাখে।
শুধু ইসলাম নয়, ইহুদি ধর্মেও জয়তুনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তাদের কাছে এটি শান্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। পবিত্র কোরআনে উল্লেখ রয়েছে যে, আগের কিতাবেও এই গাছের কথা বলা হয়েছে।
জয়তুন কেবল একটি ফল নয়, বরং এটি বরকত, সুস্বাস্থ্য ও শান্তির প্রতীক। প্রিয়নবী (সা.)-এর সুন্নত অনুযায়ী জয়তুন ও এর তেল ব্যবহার করা শুধু শরীরের জন্য উপকারী নয়, বরং এটি দ্বীনী দৃষ্টিকোণ থেকেও ফজিলতপূর্ণ একটি আমল।
তাবিব
