ছবি: সংগৃহীত
আজ পবিত্র শবে মেরাজ, এক বিস্ময়কর রাত যা মুসলিম ইতিহাসে গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। এই রাতেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সপ্তম আকাশে ভ্রমণ করেন এবং মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
মুসলিম ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, এটি মানব ইতিহাসের প্রথম মহাকাশ ভ্রমণ, আর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই মহাকাশযাত্রার প্রথম অভিযাত্রী।
মেরাজের রাতের ঘটনা শুরু হয় কাবার কাছে, যেখানে জিব্রাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলেন। বোরাক নামের এক বিশেষ বাহনে চড়ে তিনি প্রথমে মসজিদুল আকসায় যান। সেখানে পূর্ববর্তী নবী-রাসূলদের সঙ্গে নামাজ আদায়ের পর, তিনি আকাশের পথে রওনা দেন।
প্রথম আকাশে তার সাক্ষাৎ হয় হযরত আদম আলাইহিস সালামের সঙ্গে। এরপর একে একে দ্বিতীয় আকাশে ঈসা আলাইহিস সালাম ও ইয়াহিয়া আলাইহিস সালাম, তৃতীয় আকাশে ইউসুফ আলাইহিস সালাম এবং সপ্তম আকাশে ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের সঙ্গে দেখা করেন। সর্বশেষ সিদরাতুল মুনতাহায় পৌঁছালে জিব্রাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিদায় নিয়ে মহানবী একাই আল্লাহর সান্নিধ্যে যান।
এই মহাকাশযাত্রায় আল্লাহর কাছ থেকে মুসলিমদের জন্য দৈনিক ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়। তবে হযরত মুসা আলাইহিস সালামের পরামর্শে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কাছে বারবার অনুরোধ জানান এবং নামাজের সংখ্যা কমতে কমতে ৫ ওয়াক্তে নির্ধারিত হয়। আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দেন যে, ৫ ওয়াক্ত নামাজের প্রতিদানে ৫০ ওয়াক্তের সওয়াব দেয়া হবে।
এই রাতেই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখেন। এক রাতের মধ্যেই এই মহাযাত্রা শেষে তিনি ফিরে আসেন মক্কায়। পরদিন এই ঘটনাটি বর্ণনা করলে মক্কার মুশরিকরা তাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ শুরু করে।
তবে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু দৃঢ়ভাবে ঘোষণা দেন, “মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি এ কথা বলে থাকেন, তবে নিঃসন্দেহে এটাই ঘটেছে।” সেই থেকেই তিনি “সিদ্দিক” উপাধিতে ভূষিত হন।
মেরাজের রাত মুসলিম উম্মাহর জন্য শুধু আধ্যাত্মিক নয়, মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসেও এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/gHQDA4fmgUE?si=a8YwCBgV5hXjFFKD
এম.কে.