ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১

যে ৫ ব্যক্তির দোয়া কখনোই কবুল হবে না

প্রকাশিত: ১৮:১৭, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২০:৩৮, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫

যে ৫ ব্যক্তির দোয়া কখনোই কবুল হবে না

ছবি: সংগৃহীত

মানুষের জীবনে দোয়া একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সংযোগের মাধ্যম। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, দোয়া কবুল হয় না। কেন কারো দোয়া কবুল হয় না এবং কী কারণে আল্লাহ দোয়া ফিরিয়ে দেন, তা নিয়ে ইসলামিক শিক্ষা থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে এর বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:

১. হারাম খাওয়া ও উপার্জন করা ব্যক্তি
হারাম খাবার বা হারাম উপার্জন দোয়া কবুল না হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি হারাম খাবার, পানীয় বা পোশাক ব্যবহার করে, তার দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না। হারাম জীবিকা একজন ব্যক্তির জীবন ও দোয়াকে কলুষিত করে তোলে। রাসুল (সা.) সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.)-কে বলেছিলেন, “হে সাদ! তোমার খাদ্য পবিত্র করো, তাহলে তুমি এমন ব্যক্তি হবে যার দোয়া আল্লাহ কবুল করবেন।” (আল মুজামুল আওসাত: ৬৪৯৫)
অতএব, পবিত্র জীবনযাপন ও হালাল উপার্জন দোয়া কবুলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

২. নিরাশ হওয়া বা হতাশা প্রকাশ করা ব্যক্তি
যে ব্যক্তি দোয়া করার পর আল্লাহর প্রতি আস্থা হারায় এবং হতাশ হয়ে যায়, তার দোয়া কবুল হয় না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমাদের প্রত্যেকের দোয়া কবুল হয়, যদি সে তাড়াহুড়ো না করে এবং না বলে যে, ‘আমি দোয়া করেছি, কিন্তু তা কবুল হলো না।’” (বুখারি: ৬৩৪০)
দোয়ার ক্ষেত্রে ধৈর্য ও আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখা জরুরি। দোয়া করার সময় মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহ তার বান্দার কল্যাণে সবসময় কাজ করেন।

৩. আল্লাহ প্রদত্ত দায়িত্ব পালন না করা ব্যক্তি
নবী করিম (সা.) বলেছেন, “তোমরা সৎ কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখবে। তা না হলে আল্লাহ তোমাদের ওপর শাস্তি নাজিল করবেন, আর তখন তোমরা দোয়া করলেও তা কবুল হবে না।” (তিরমিজি: ২১৬৯)
অতএব, আল্লাহর দেওয়া দায়িত্ব যেমন নামাজ, রোজা, জাকাত, সৎ কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখার মতো বিষয়গুলো পালন না করলে দোয়া কবুল হওয়ার আশা করা যায় না।

৪. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা ব্যক্তি
আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করাও দোয়া কবুল না হওয়ার অন্যতম কারণ। হাদিসে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যদি কোনো ব্যক্তি তার দোয়ায় কোনো গুনাহ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের প্রার্থনা না করে, তবে আল্লাহ তার দোয়া এই তিনটি উপায়ে কবুল করেন—
১. তার দোয়া দুনিয়াতে পূর্ণ করে দেন।
২. তার জন্য আখিরাতে সঞ্চয় করেন।
৩. তাকে কোনো বিপদ বা অকল্যাণ থেকে রক্ষা করেন। (আত-তারগীব: ১৬৩৩)

৫. দোয়ার সময় মনোযোগের অভাব 
দোয়া করার সময় মনোযোগী হওয়া অত্যন্ত জরুরি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার পূর্ণ আস্থা নিয়ে দোয়া করো। কারণ, আল্লাহ অসাড় মন ও অমনোযোগী ব্যক্তির দোয়া কবুল করেন না।” (তিরমিজি: ৩৪৭৯)
তাই দোয়ার সময় আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও একাগ্রতা থাকা আবশ্যক।

সুতরাং, দোয়া কবুলের জন্য আমাদের উচিত নিজের জীবন পবিত্র রাখা, হারাম থেকে দূরে থাকা, আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখা, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা এবং মনোযোগ ও একাগ্রতার সঙ্গে দোয়া করা। আল্লাহর নির্দেশ মেনে চললে দোয়া কবুলের সুযোগ আরও বাড়ে।

নাহিদা

×