ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

অজ্ঞান হলে কি অজু ভাঙ্গে?

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

অজ্ঞান হলে কি অজু ভাঙ্গে?

ছবি: সংগৃহীত

ইবাদতের জন্য অজু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত নামাজ আদায় এবং দেখে দেখে কোরআন তিলাওয়াতের জন্য অজু আবশ্যক। অজু ছাড়া স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কোনো ইবাদত শুদ্ধ হয় না।  

অজু করার পর কিছু কারনে অজু ভঙ্গের কারন হতে পারে। এর মধ্যে একটি হলো পাগল, মাতাল বা অজ্ঞান হওয়া। যদি কোনো ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যায়, তাহলে তার অজু ভেঙে যাবে। ইবাদত করতে হলে তাকে নতুন করে আবার অজু করতে হবে।

আলেমদের মতে, কেউ অল্প সময় অজ্ঞান থাকলেও তার অজু নষ্ট হয়ে যায়। হাসান বসরী (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি —

فِي رَجُلٍ غُشِيَ عَلَيْهِ وَهُوَ جَالِسٌ، قَالَ: يَتَوَضّأُ

কোনো ব্যক্তি যদি অজ্ঞান হয়ে যায় এবং সে বসা অবস্থায়ও থাকে তবেও তার অজু ভেঙে যাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদিস : ২০৯০)

ইবরাহীম নাখায়ী (রাহ.) বলেন—

إِذَا أَفَاقَ الْمُصَابُ تَوَضّأَ

অজ্ঞান ব্যক্তি জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর (পবিত্রতা অর্জনের জন্য) অজু করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা: ২০৯১)

তাই কেউ অজ্ঞান হয়ে গেলে তার অজু নষ্ট হয়ে যায়। তাই জ্ঞান ফেরার পর নামাজ এবং এ জাতীয় ইবাদতের জন্য নতুন করে অজু করত হবে। 
 
(আলবাহরুর রায়েক ১/৩৯;খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৮)

অজু ভঙ্গের কারণ

এক. পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া

যেমন বায়ু, পেশাব-পায়খানা, পোকা ইত্যাদি। (হেদায়া, হাদিস : ১/৭)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসলে (নামাজ পড়তে পবিত্রতা অর্জন করে নাও)।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ০৬ )

আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, নিশ্চয় রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘শরীর থেকে যা কিছু বের হয়, তার কারণে অজু ভেঙে যায়...।’ (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি, হাদিস : ৫৬৮)

দুই. রক্ত, পূঁজ, বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। (হেদায়া : ১/১০)

আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.)-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তো, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অজু করে নিতেন। (মুয়াত্তা মালিক, হাদিস : ১১০)

তিন. মুখ ভরে বমি করা।

আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তির বমি হয়, অথবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে, বা মজি (সহবারের আগে বের হওয়া সাদা পানি) বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অজু করে নেবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১২২১)

চার. থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া।

হাসান বসরি রহ. বলেন, যে ব্যক্তি তার থুথুতে রক্ত দেখে তাহলে থুথুতে রক্ত প্রবল না হলে তার ওপর অজু করা আবশ্যক হয় না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ১৩৩০)

পাঁচ. চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সিজদা অবস্থায় ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না, তবে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙ্গে যাবে, কেননা চিৎ বা কাৎ হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়।’ [ফলে বাতকর্ম হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে] (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩১৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২০২)

রাসেল

×