পবিত্র কোরআনে বর্ণিত সামুদ জাতি ও তাদের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে গবেষণা এবং পেট্রা শহরের সাথে তাদের সম্পর্কিত ধারণাটি এক গভীর ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় আলোচনার অংশ। সামুদ জাতি সম্পর্কে কোরআনে যে বিবরণ দেওয়া হয়েছে, তা হলো তারা পাহাড় কেটে ঘরবাড়ি নির্মাণ করত এবং আল্লাহর নবী হজরত সালেহ (আ.)-এর মাধ্যমে সতর্ক হওয়ার পরও অবাধ্য হয়ে যায়। এর পরিণতিতে তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
পেট্রা শহর, যা আধুনিক জর্ডানে অবস্থিত, তার স্থাপত্য এবং ধ্বংসের ধরণ সামুদ জাতির কোরআনে বর্ণিত বৈশিষ্ট্যের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। পেট্রা একটি প্রাচীন নাবাতীয় শহর যা লাল পাথরের মধ্যে খোদাই করে তৈরি করা হয়েছিল। এটি ১৮১২ সালে ইউরোপীয় প্রত্নতাত্ত্বিকরা পুনরায় আবিষ্কার করেন। এর ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপত্য কাঠামো যে পদ্ধতিতে তৈরি, তা কোরআনে বর্ণিত সামুদ জাতির বর্ণনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে মনে করা হয়।
তবে কয়েকটি বিষয় গবেষকদের মধ্যে বিতর্ক তৈরি করেছে:
সময়কাল নিয়ে বিতর্ক: সামুদ জাতির সময়কাল কোরআন ও অন্যান্য ইসলামী সূত্রে যে সময়ে বর্ণিত, তা পেট্রার প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে নির্ধারিত সময়কাল থেকে ভিন্ন। তবে প্রত্নতাত্ত্বিক সময়কাল নির্ধারণ পদ্ধতিতে ভুল বা অনিশ্চয়তা থাকার বিষয়টি এখানে বিবেচ্য হতে পারে।
ধ্বংসের কারণ: কোরআনে সামুদ জাতির ধ্বংসের কারণ হিসেবে আল্লাহর শাস্তি উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে পেট্রা ধ্বংসের কারণ হিসেবে ভূমিকম্প বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা বলা হয়।
আরও গবেষণার প্রয়োজনীয়তা: পেট্রা ও সামুদ জাতির মধ্যে সম্পর্ক নিশ্চিত করতে হলে আরও প্রত্নতাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে।
সামুদ জাতির ধ্বংসাবশেষ এবং পেট্রার মধ্যে এই মিল-অমিল আমাদের ইতিহাস, ধর্ম এবং বিজ্ঞান সম্পর্কে আরও গভীরভাবে জানার জন্য অনুপ্রাণিত করে। এই বিষয়ে আরও গবেষণা সম্ভবত ভবিষ্যতে নতুন আলোকপাত করতে পারে।
রাজু