ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সময় হলো বিশেষ বরকত ও সওয়াবের সময়। এই সময়টা ইবাদত-বন্দেগি, জিকির, কুরআন তিলাওয়াত ও দোয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিনের শুরুতে আল্লাহর জিকিরে রিজিকে বরকত হয়। দিনটি ভালো কাটে। সাধারণত এই জিকির ফজরের সময় থেকে সূর্য উঠা পর্যন্ত সময়ে করার কথা এসেছে।
যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসি পড়বে সে বিকেল হওয়া পর্যন্ত জিন ও শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে, আর যে ব্যক্তি বিকেলে তা বলবে সে সকাল হওয়া পর্যন্ত জিন ও শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে।
আয়াতুল কুরসি
বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তা’খুযুহু সিনাতুঁ ওয়ালা নাঊম। লাহূ মা ফিস্ সামাওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ’ ই’ন্দাহূ ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খলফাহুম, ওয়ালা ইউহিতূনা বিশাইয়্যিম্ মিন ‘ইলমিহি ইল্লা বিমা শা-আ’ ওয়াসিআ’ কুরসিইয়্যুহুস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি, ওয়ালা ইয়াউ’দুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল আলিইয়্যুল আজীম। (সুরা বাকারা: ২৫৫)
অর্থ: আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তারই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতীত এমন কে আছে যে তাঁকে সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পেছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত। তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলোর তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আয়াতুল কুরসি নিয়মিত পড়ার এবং প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর অবশ্যই পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
১. কুরআন তিলাওয়াত
ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত কুরআন তিলাওয়াত করা খুবই ফজিলতপূর্ণ।
২. জিকির ও তাসবিহ
ফজরের নামাজের পর নিচের জিকিরগুলো করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ:
-
সুবহানাল্লাহ ওয়া বিহামদিহি আস্তাগফিরুল্লাহ (১০০ বার)। হুজুর (সা.) প্রত্যহ বাদ ফজর জায়নামাজে বসেই এ তওবা পাঠ করতেন।
-
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শরীকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাই'ইন কাদির। (১০ বার)
-
সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার (৩৩ বার করে, এরপর ১ বার: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাই'ইন কাদির।)
৩. দোয়া
ফজরের সময় দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ সময়। এই সময় নিজের জন্য, পরিবার, উম্মাহ ও দুনিয়া-আখিরাতের কল্যাণের জন্য দোয়া করতে পারেন।
-
উচ্চারণ: হাসবিয়াল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুয়া, ‘আলাইহি তাওয়াক্কালতু, ওয়াহুয়া রব্বুল আরশিল আজিম) (৭ বার)
অর্থ: আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আমি তার উপরই ভরসা করি। আর তিনি মহান আরশের রব্ব। (আবু দাউদ)
-
"আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইল্মান নাফিয়া, ওয়া রিযকান তইয়িবা, ওয়া আমালান মুতাক্বাব্বালা।"
(অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে উপকারী জ্ঞান, হালাল রিজিক এবং কবুলযোগ্য আমল প্রার্থনা করছি।) -
"রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাও, ওয়াক্বিনা আ'জাবান্নার।"
এই সময়টুকু আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার সুবর্ণ সুযোগ। তাই যথাসম্ভব এই সময়টাকে ইবাদত-বন্দেগি এবং ভালো কাজে ব্যয় করুন।
আফরোজা