ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী, বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং সামাজিক চুক্তি। তবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ও খরচের ব্যাপারে শরীয়ত সুষ্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেছে।
ইসলামিক আইন অনুযায়ী, যা আল্লাহ ও তার রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবশ্যক বা ফরজ করেননি, তা কোনো ব্যক্তি বা সমাজ বাধ্যতামূলক করে তুলতে পারে না। এটি শরীয়তে বেদাত হিসেবে গণ্য হয়।
যদি কেউ নিজ থেকে খুশি হয়ে কোনো খরচ বা দান করেন, সেটা জায়েজ। তবে সেটি কোনো চাপ বা বাধ্যবাধকতার কারণে হলে তা জায়েজ নয়।
মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বা কোনো খরচ মেটাতে চাঁদা বা দান গ্রহণ করা যেতে পারে, তবে এটি স্বেচ্ছাসেবী হতে হবে। বিয়ের সময় বাধ্যতামূলক মসজিদ খরচ আদায় করা ইসলামে অনুমোদিত নয়। এটি অন্যায়, এবং যদি কাউকে বাধ্য করা হয়, তাহলে তা জুলুম এবং কুপ্রথার অংশ।
ইসলামে বিয়েকে সহজ ও সরল রাখা হয়েছে। অতিরিক্ত আড়ম্বর, জুলুম বা চাপ দেওয়া, যেমন বড় যাত্রীর খাওয়া-দাওয়া, অযৌক্তিক খরচ বা প্রথাগত খরচ চাপিয়ে দেওয়া—এসবই ইসলামিক শিক্ষার পরিপন্থী।
ইসলামে যেকোনো সামাজিক বা পারিবারিক ব্যবস্থায় ইনসাফ বজায় রাখা জরুরি। একপক্ষের উপর অন্য পক্ষের অতিরিক্ত চাপ বা জুলুম ইসলামিক মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
বিয়েতে মসজিদের খরচ দিতে বাধ্য করা শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ নয়। এটি বর-কনের পরিবার বা যেকোনো পক্ষের ওপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করে, যা ইসলামের সহজ ও সাদাসিধে বিয়ের নীতির পরিপন্থী। মসজিদের জন্য দান অবশ্যই উৎসাহিত করা উচিত, তবে তা হতে হবে ইচ্ছাকৃত এবং শর্তহীন।
সংক্ষেপে সিদ্ধান্ত: স্বেচ্ছায় মসজিদ খরচ বা অন্য কোনো দান করা জায়েজ। বাধ্যতামূলকভাবে মসজিদ খরচ বা অন্য খরচ আদায় করা সম্পূর্ণরূপে শরীয়তে নিষিদ্ধ এবং এটি বেদাত ও কুপ্রথার অন্তর্ভুক্ত। মুসলিম সমাজের উচিত এই ধরনের কুপ্রথা বর্জন করা এবং আল্লাহ ও রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নির্দেশিত সহজ-সরল পদ্ধতিতে বিয়ে সম্পন্ন করা।
রাজু