ছবি : সংগৃহীত
দোয়া মানে হলো প্রার্থনা করা। দোয়া মুমিনের হাতিয়ার। দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা সম্ভব হয়। কিন্তু রাসুল সা. কয়েকটি বিষয়ে কখনো আল্লাহর কাছে চাইতে নিষেধ করেছেন। পবিত্র আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে , ‘আর মানুষ যেভাবে কল্যাণ কামনা করে, সেভাবেই অকল্যাণ কামনা করে; বস্তুত মানুষ খুব বেশি তাড়াহুড়াকারী। (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১১)
নিজের মৃত্যু কামনা করে দোয়া করা
অনেক সময় মানুষ তার বিভিন্ন বিপদ-আপদ, ঋণের বোঝা বা অসুস্থতায় হতাশ হয়ে মহান আল্লাহর কাছে মৃত্যু কামনা করে দোয়া করেন। রাসুল (সা.) তাঁর উম্মতদের কঠিন বিপদেও মৃত্যু কামনা করতে নিষেধ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে এবং মৃত্যু আসার আগে যেন মৃত্যুর জন্য দোয়া না করে। কেননা তোমাদের কেউ মারা গেলে তার আমল বন্ধ হয়ে যায়। আর মুমিন লোকের বয়স তার কল্যাণই বাড়িয়ে থাকে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৭১২)
ইহকালেই শাস্তি পাওয়ার দোয়া করা
পরকালীন শাস্তি থেকে বাঁচার আশায় ইহকালেই নিজের শাস্তি কামনা না করা। এটা বান্দার ওপর কঠিন বিপদ ডেকে আনতে পারে। ইহকালে শাস্তির দোয়া করার ভয়াবহতা নিয়ে একটি হাদিস রয়েছে, সেখানে নবীজি (সা.) এক সাহাবিকে এ ধরনের দোয়া করতে নিষেধ করেছেন।
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) একজন মুসলিম রোগীকে সেবা করতে গেলেন। সে অসুস্থতায় অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিল, এমনকি সে পাখির ছানার মতো হয়ে গেল। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বলেন, তুমি কি কোনো বিষয়ে প্রার্থনা করেছিলে অথবা আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে কিছু চেয়েছিলে? সে বলল, হ্যাঁ। আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহ, আপনি পরকালে আমাকে যে সাজা দেবেন তা এই ইহকালেই দিয়ে দিন। সে সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, সুবহানাল্লাহ, তোমার এমন সামর্থ্য নেই যে তা বহন করবে? অথবা তুমি তা সহ্য করতে পরবে না। তুমি এমনটি বললে না কেন? হে আল্লাহ, আমাদের কল্যাণ দাও পৃথিবীতে এবং কল্যাণ দান করো পরকালেও। আর জাহান্নাম থেকে আমাদের রক্ষা করো। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, তখন তিনি তাঁর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। আর আল্লাহ তাকে সুস্থ করে দেন। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭২৮)
তোমার (আল্লাহ) ইচ্ছা হলে আমাকে দান করো
নবীজি (সা.) তাঁর উম্মতদের এ ধরনের বাক্য দ্বারা দোয়া করতে নিষেধ করেছেন। আনাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন দোয়া করে, সে যেন দৃঢ়তা প্রকাশের সঙ্গে দোয়া করে। আর সে যেন না বলে, ‘হে আল্লাহ, যদি তুমি ইচ্ছা করো, তবে আমাকে দান করো।’ কেননা মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর জন্য কোনো বাধ্যকারী নেই। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭০৪)
মনিষা মিম