
ছবিঃ সংগৃহীত
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, “আওয়ামী লীগ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি পরিত্যক্ত রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ একটি মরা লাশ। এই লাশকে নিয়ে টানাটানি করে কোনো লাভ নেই। এখন আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এই লাশকে কবর দেওয়া, যাতে এই মরা লাশ দুর্গন্ধ না ছড়ায়।”
সম্প্রতি এক গণসমাবেশে প্রধান অথিতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভিপি নুর বলেন, “অপর রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে একটি বার্তা দিতে চাই—আজ আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজি, রাহাজানি, নির্যাতন, নিপীড়ন, হাট-বাজার ইজারা নিয়ে চাঁদাবাজি, মানুষকে জিম্মি করার মতো দুর্বৃত্তপনায় তাদের নির্মম পতন ঘটেছে। আমরা চাই না, মানুষ যেন সেই একই আচরণ আমাদের মধ্যে খুঁজে পাক। আজ আওয়ামী লীগের পতন ঘটেছে। এই এলাকার আওয়ামী লীগের অনেক বড় নেতা দেশ ছেড়ে লন্ডনে, দিল্লিতে পালিয়েছে। তাদের ছেলে-মেয়েরা বিদেশে মজমাস্তি করছে, আর যারা এখানে ছিল তারা এখন চরে-তরে, পাড়ায়-পাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা দেখেছেন, এই ৫ই আগস্টে আওয়ামী লীগের পতনের পর তাদের অনেক নেতা ভারতে পালিয়েছে। আমরা অনেক দিন ধরেই বলে আসছিলাম, আওয়ামী লীগ ভারতীয় তাবেদার একটি রাজনৈতিক দল, যারা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে। এখন সেই প্রমাণ আপনারা নিজেরাই দেখতে পাচ্ছেন। আজকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং চীনের সঙ্গে চলমান সংকটের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকেও অস্থির করতে ভারতের নানা ষড়যন্ত্র চলছে, যেখানে আওয়ামী লীগকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “গ্রাম-গঞ্জ, পাড়া-মহল্লার সকল নাগরিক ও রাজনৈতিক দলকে বলব, আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত হোন।”
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “এদেশে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—দু'টি বৃহৎ রাজনৈতিক দল ছিল। অনেক সাধারণ মানুষ যারা আওয়ামী লীগ সমর্থন করতেন কিংবা করতেন, কিন্তু তারা এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না—তাদের কোনোভাবে হয়রানি করা যাবে না। তাদের ওপর কেউ জুলুম করবেন না। তবে যারা এলাকায় দখলদারি, চাঁদাবাজি, ভিন্নমতের ওপর হামলা ও মামলা করেছে—তাদের প্রশ্নে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না।”
ভিপি নুর আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের বাংলায় কোনো রাজনৈতিক ঠিকানা থাকবে না। ‘এই বাংলায় হবে না আওয়ামী লীগের ঠিকানা’—এই স্লোগানে আজকের সমাবেশ মুখরিত।”
তিনি বলেন, “এই সরকার সকল রাজনৈতিক দলের সমর্থিত একটি সরকার। এই সরকারের কোনো বিরোধী দল নেই। আমরা কেউ সরকারবিরোধী নই। আমরা সবাই মিলে রাষ্ট্র সংস্কার ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করছি। বারবার আলোচনায় বসে আমরা আহ্বান জানিয়েছি—আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগকে সন্ত্রাসী ও গণহত্যাকারী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করতে। ছাত্রলীগ ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে, আমরা আশা করি খুব দ্রুত আওয়ামী লীগ ও যুবলীগকেও নিষিদ্ধ করা হবে।”
ইমরান