ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

অনেকে দেশে ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসন করার স্বপ্ন দেখছে: মামুনুল হক

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

অনেকে দেশে ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসন করার স্বপ্ন দেখছে: মামুনুল হক

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক বলেছেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের চেতনার অবসান হয়েছে। আর কখনো বাংলার মাটিতে সেই চেতনাকে পুনর্জন্ম নিতে দেওয়া হবে না বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’, ‘শাপলা চত্বরে গণহত্যার বিচার’ এবং ‘খেলাফত প্রতিষ্ঠার’ দাবিতে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের রংপুর জেলা সভাপতি ক্বারী মুহাম্মদ আতাউল হক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি শারাফাত হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসনাত জালালী, মাওলানা এনামুল হক মুসা এবং মাওলানা রেজাউল করিম।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের আধিপত্যবাদের কবর রচিত হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ছিনতাই করা হয়েছিল, এবং আজও একটি চক্র নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তবে এবারে বাংলাদেশের জনগণ ৭১ ও ৭২ সালের চেতনা রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতেও প্রস্তুত।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিসভা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ছাত্র-জনতার ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা অস্ত্র এবং হেলিকপ্টার ব্যবহার করে ন্যায়সঙ্গত দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। অতীতে যারা বাকশাল ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছে, তাদেরই স্বাধীনতাবিরোধী আখ্যা দিয়ে একদলীয় শাসন কায়েমের চেষ্টা করা হয়েছে।

মামুনুল হক বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতন ঘটে। চার কোটি ছাত্র রাস্তায় নেমে স্পষ্ট করে দিয়েছিল, তারা কোনো রাজাকার নয় বরং দেশের প্রকৃত স্বাধীনতার ধারক ও বাহক।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার সরকার পাঁচটি পৃথক গণহত্যার মাধ্যমে প্রায় তিন হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে। এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে বাংলাদেশের মাটিতে পুনর্বাসন করতে দেওয়া যাবে না বলেও তিনি দৃঢ় ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগকে পাঁচটি গণহত্যাসহ হাজার হাজার গুম ও খুনের দায়ে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিসভার খুনি সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। যারা প্রশাসনের ক্ষমতার অপব্যবহার করে জনগণের বিরুদ্ধে গুলি চালিয়েছে, তাদেরও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।"

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদ, একদলীয় শাসন এবং দুর্নীতির বিপক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তিনি ডিজিটাল বা স্মার্ট বাংলাদেশ নয়, একটি ন্যায়ভিত্তিক ও ইসলামী মূল্যবোধে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

গণসমাবেশ শেষে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, "আমরা আর অন্যায়ের বাংলা দেখতে চাই না। সংগ্রামী বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।"

সমাবেশে সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা হাত তুলে ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি সমর্থন জানান এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের স্বপ্ন প্রতিহত করার দৃঢ় শপথ নেন।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/Yw-G_9XBdog?si=hBHwNZZ3qUm3iJhc

এম.কে.

×