ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২

আওয়ামী লীগ এ দেশে আর রাজনীতি করতে পারবেনা: নুর

প্রকাশিত: ০১:৫৭, ২৭ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ০১:৫৭, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

আওয়ামী লীগ এ দেশে আর রাজনীতি করতে পারবেনা: নুর

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরল হক নুর বলেছেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে শুধুমাত্র আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ঘটায়নি এ দেশের ছাত্রজনতা ভারতীয় আগ্রাসন এবং আধিপত্যকেও উচ্ছেদ করেছে। 

তিনি বলেন, তাদের অবস্থান পরিস্কার-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ঠিকানা হবেনা। আওয়ামী লীগ এ দেশে আর রাজনীতি করতে পারবেনা। 

নূর আরও বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো দেশে এই ধরণের জঘন্য গণহত্যা, বর্বরতার পর কোন রাজনৈতিক দল রাজনীতি করতে পারেনি।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ের মুক্তমঞ্চে জেলা গণ অধিকার পরিষদের উদ্যোগে অয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

নূরুল হক নুর বলেন, আমার দেশের মানুষ সীমান্তে মরে, কিন্তু আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছরে সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রতিবাদ করেনি। বরং সরকারের মন্ত্রীরা নির্লজ্জ বেহায়ার মত বলেছে ভারতের সঙ্গে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মত সম্পর্ক। এখন এই নির্লজ্জ বেহায়ারা জনগণের প্রতিরোধের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে নাম পরিবর্তন করে হিন্দু সেজেছে। এতেই প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগ ছিলো ভারতের দাস, গোলামি করা রাজনৈতিক দল। প্রতিবেশি রাষ্ট্র হিসেবে আমরা চাই, ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হবে, ন্যায্যতার সম্পর্ক হবে, গোলামির সম্পর্ক নয়।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে ভুলে গেলে চলবেনা যে তাদের সুবিধাবাজি, ভাওতাবাজি চিন্তাভাবনার কারণেই গত ১৬ বছর তাদের ডাকে জনগণ রাস্তায় নামেনি। ছাত্রজনতা তরুনদের বিশ্বাস করেই বাংলাদেশকে নতুনভাবে বিনির্মাণ করার জন্য বুক চেতিয়ে লড়াই করেছে। 

তিনি আরও বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত যত আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে, প্রত্যেকটি আন্দোলনেই সাধারণ শ্রমিক, কৃষক, জনতা লড়াই সংগ্রাম করেছে, আর এর ফল ভোগ করেছে এ দেশের ভাওতাবাজ ভন্ড রাজনীতিবীদরা। আমরা বলতে চাই, আর ভাওতাবাজ ভন্ড রাজনীতিবীদদের পিছনে ঘুরে দেশ, সমাজ, এলাকার ক্ষতি করা যাবেনা, ভবিষ্যত নষ্ট করা যাবেনা।

নুর বলেন, এখন সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর। সমাজকে পরিবর্তনের জন্য সাধারণ ছাত্রজনতাকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। আওয়ামী লীগের আমলে যে লুটপাট, দখলদারি, চাঁদাবাজি আর মাফিয়াদের রাজনীতি চলেছে-গণঅভ্যুত্থানের পরও কিন্তু তার পরিবর্তন হয় নাই।

তিনি বলেন,  ট্রাক, টেম্পু, বাস স্ট্যান্ড থেকে আগে যেভাবে চাঁদা তোলা হতো, এখনও তা বন্ধ হয়নি। আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেলেও কাঁচাবাজার, সবজি বাজার, সমিতি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, মিল ফ্যাক্টরি থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। চাঁদাবাজ, দখলদারদেরতো আমরা জীবন দিয়ে, বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হটিয়েছি, বিতাড়িত করেছি। তাহলে এখন চাঁদাবাজ, দখলদার কারা? আমরা একটা পরিবর্তনের রাজনীতির কথা বলি। বিভিন্ন রাজননৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে বলি- আপনাদের স্বভাব-চরিত্র যদি আওয়ামী লীগের মত হয়, জনগণ কিন্তু ভোটের মাঠে জবাব দেবে।

জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মাহাফুজার রহমান সভাপতিত্বে গণসমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূর আসাদ, গণসংহতি আন্দোলনের পঞ্চগড়ের আহ্বায়ক সাজেদার রহমান সাজু, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- জাগপার সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার বিপ্লব, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বিসহ গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

সজিব

×