
রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে শুক্রবার ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ
‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ নামে আরও একটি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়েছে, যার চেয়ারম্যান হয়েছেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ প্রধান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। মহাসচিব হিসেবে তার সঙ্গী হয়েছেন সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, যিনি দুই বছর আগে বিএনপি থেকে বহিষ্কার হয়েছেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি।
শুক্রবার ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নতুন দলের ঘোষণা দেন শওকত মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি হচ্ছে, পিবি। আমরা নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করব এবং সেই সময়ে আমাদের গঠনতন্ত্র, লোগো, প্রতীক, পতাকা সবগুলোই আমরা জমা দেব।’
শওকত মাহমুদ বলেন, বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, প্রতিটি গণঅভ্যুত্থান, বিপ্লব ও আন্দোলনের পর ওইসব সংগ্রামী চেতনায় নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের অভ্যুদয় ঘটে। যেহেতু রাষ্ট্র সাজবে একাত্তর ও চব্বিশের গণজাগরণের চেতনায়, সেই আঙ্গিকে নতুন দলের আবির্ভাব অনিবার্য। জাতির এই মাহেন্দ্রক্ষণে জাতীয় প্রত্যাশায় সকল প্রকার বৈষম্য, ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে জনকল্যাণ, ইনসাফ ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে এবং গর্বিত জাতীয়তাবোধ দৃঢ়করণ করতে আমরা আজ নতুন এই দলের আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করছি।’
শওকত মাহমুদ বলেন, ‘মোটা দাগে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান- সর্বোপরি ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের চেতনায় আমরা জনতা পার্টি বাংলাদেশ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের মূল স্লোগান হবে, গড়ব মোরা ইনসাফের দেশ’ম্য, মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশকে বিনির্মাণের সফল অভিযাত্রায় আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
দলের ১৮ দফা নীতিমালা তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দলের তুলনায় আমাদের পার্থক্য হবে নিখাদ দেশপ্রেম, চিন্তা- চেতনায় স্বচ্ছতা ও সাহসিকতা, দলের ভেতরে-বাইরে গণতন্ত্রের অব্যাহত চর্চা, উচ্চারণে-কর্মে-জনসেবায় অভিন্ন লক্ষ্যাভিসারী হওয়া। জনগণকে রাষ্ট্রের মালিকানা ও নীতিনির্ধারণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।
পরে ইলিয়াস কাঞ্চন নতুন দলের কমিটি ঘোষণা করেন। তারা হলেন- নির্বাহী চেয়ারম্যান ও মুখপাত্র সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী গোলাম সারওয়ার মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল হক হাফিজ, এবিএম ওয়ালিউর রহমান খান, রেহানা সালাম, মো. আবদুল্লাহ, এম এ ইউসুফ ও নির্মল চক্রবর্তী।
মহাসচিব শওকত মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম আসাদুজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব এবিএম রফিকুল হক তালুদার রাজা, আল আমিন রাজু, নাজমুল আহসান, সমন্বয়নকারী নুরুল কাদের সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ আহমেদ। সদস্যরা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত মেজর ইমরান, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সাব্বির, প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক গুলজার হোসেন ও প্রচার সম্পাদক হাসিবুর রেজা কল্লোল। উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা হলেন, শাহ মো. আবু জাফর, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মুজিব, ইকবাল হোসেন মাহমুদ, ফরহাদ হোসেন মাহবুব, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, আউয়াল ঠাকুর, তৌহিদা ফারুকী, মামুনুর রশীদ। পরে এই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে বলে জানান, চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
নাম নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গ ॥ চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ নামে নতুন দল আত্মপ্রকাশের আগে বৃহস্পতিবার তাকে আইনি নোটিস পাঠান ‘জনতার বাংলাদেশ পার্টির’ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম সবুজ খান। দুটি দলের নামের মিলের কারণে ‘জনতার বাংলাদেশ পার্টির’ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে অভিযোগ করে ইলিয়াস কাঞ্চনকে তার দলের অন্য নাম দেওয়ারও অনুরোধ করেন তিনি।