
ছবি: সংগৃহীত
ব্রিটিশ সাপ্তাহিক 'দ্য উইক'-এর সাম্প্রতিক সংখ্যায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে একটি কাভার স্টোরি প্রকাশিত হয়েছে, যার শিরোনাম ‘Destiny’s Child’ বা ‘নিয়তির সন্তান’। নয়াদিল্লি ব্যুরো চিফ নম্রতা বিজি আহুজা’র লেখায় উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের দল ভাঙার চেষ্টার বিপরীতে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তারেক রহমানের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে এবং তিনি ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে রয়েছেন।
৫৭ বছর বয়সী তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করলেও, দলের নেতৃত্বে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছেন। বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, তারেক ইতোমধ্যে একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। তার লক্ষ্য একটি জ্ঞানভিত্তিক, দুর্নীতিমুক্ত ও উন্নয়নকেন্দ্রিক রাজনীতি গড়ে তোলা।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ও তারেকের উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার বলেন, "চাকরি, জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি ও শ্রমজীবী জনগণের জন্য সমান সুযোগ ও ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। তারেক রহমানের দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়তে চাই।"
রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসিফ বিন আলী জানান, “তিনি নির্বাসনে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং তার কাছ থেকে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার অঙ্গীকার নেওয়া হয়েছিল, যা ছিল তার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। কিন্তু তবুও তিনি বিএনপিকে একত্রিত রেখেছেন এবং শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রদান করে যাচ্ছেন।”
২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার পর থেকেই তিনি নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর তাঁর ঢাকায় প্রত্যাবর্তন নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারেকের জন্য এটি হবে একটি ‘পূর্ণচক্র’ সম্পূর্ণ করার মুহূর্ত, যা তাকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব গ্রহণের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি চায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে তারেক রহমান দলের প্রধান মুখ হিসেবে সামনে আসুন। তাঁর নেতৃত্বেই দল পুনর্গঠনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের বিকল্প শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।
রাজনীতিতে তারেক রহমানের অভিষেক ঘটে ১৯৮৮ সালে। তবে ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় তিনি পুনরায় সক্রিয় হন এবং দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। যদিও তার বিরুদ্ধে সেই সময় সরকারের সিদ্ধান্তে অতিরিক্ত হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওঠে।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তিনি গ্রেফতার হন এবং পরে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। কিন্তু নির্বাসনের মধ্যেও তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং পরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে দলের নেতৃত্বে অটল থাকেন।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন সবচেয়ে আলোচিত নাম তারেক রহমান। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে তিনিই হতে পারেন নেতৃত্বের মুখ। বৃটিশ গণমাধ্যমের মন্তব্য সেই সম্ভাবনাকেই আরও জোরালো করেছে।
আসিফ