
ছবি: সংগৃহীত
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে সরকারের কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা, সম্প্রতি গণমাধ্যমের এমন প্রশ্নের জবাবে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘দল নিষিদ্ধকরণের ব্যাপারটা আদালতের রায়ে হতে পারে, এটা নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে অথবা পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশনের মাধ্যমেও হতে পারে। এ মুহূর্তেই এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না, বিচারিক প্রক্রিয়ার ওপর ছেড়ে দিয়েছি, বাংলাদেশের মানুষের মতামতের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আইন তৈরি করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সোমবার (২১ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মক্রম নিষিদ্ধ, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এ দাবি করে দলটি।
এদিকে, একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশো অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায় বলেছেন, “গণঅভ্যত্থানের আজকে আট মাস পরে আমাদের এই বিষয়ে কথা বলার কথা ছিল না। মানে আওয়ামী লীগ একটি ‘গন কেস’ (Gone Case)। আওয়ামী লীগের এই বিষয়টা এতদিনে সমাধান হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কি জানি একটা মিসিং, মানে কেন জানি এটা হয় না।”
টকশো অনুষ্ঠানে ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ তো শুধুমাত্র এনসিপির একার বিবেচনার বিষয় নয়, তাই নয় কি?’ উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে এনসিপি নেতা অনিক রায় বলেন, ‘আমি যদি ভুল করে না থাকি, বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা সালাউদ্দিন ভাইও বেশ কয়েকবার বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ভুল করে না থাকলে, এ্যানি ভাই তাই বলেছেন। আমরাও কিন্তু একই কথা বলছি।’
অনিক রায় আরও বলেন, ‘জুলাই গণভুত্থানে বা জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ যে গণহত্যাটা করতে নেমেছিল, এটা কিন্তু তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল। আপনি দেখবেন একবারে ওয়ার্ড পর্যায়ে যে আওয়ামী লীগের নেতা, তিনিও কিন্তু নেমেছিলেন। পুরা আওয়ামী লীগ একটা সংগঠন হিসেবে কিন্তু এই সিদ্ধান্তটা নিয়ে এই ঘটনাটি ঘটাতে নেমেছিল।’
এছাড়া, যতদিন না আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এনসিপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল রাখার দাবি জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণে নির্বাহী আদেশ প্রসঙ্গে অনিক বলেন, ‘এসব নির্বাহী আদেশের ক্রেডিবিলিটি (বিশ্বাসযোগ্যতা) একটি কাগজ পর্যন্তই। ফলে আমরা চাই একটি প্রকৃত বিচারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ফয়সালাটি হোক।’
চূড়ান্ত বিচার পর্যন্ত অপেক্ষা না করে এনসিপির পক্ষ থেকে দ্রুত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের কথা বলা হয়েছে বলে জানান অনিক রায়। তিনি বলেন, ‘আমরা বলছি যে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল এবং সকল প্রকার সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করার ঘোষণা দিতে হবে।’
এছাড়া, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের প্রসঙ্গে এনসিপির এই নেতা জানান, ‘নিবন্ধন বাতিলের কথা বলছি, কারণ নিবন্ধন বাতিল হবে, বিচার প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। বিচারের পরে যেই রায় হবে, সেই রায় অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=I1QKyTs1tgc
রাকিব