
স্বৈরাচার হাসিনার বিতর্কিত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিল শুনানি আজ। একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, আজকের শুনানিতে মুক্তি পাবেন বর্ষীয়ান এই রাজনৈতিক নেতা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে এ শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে, ২১ এপ্রিল শুনানির জন্য আজ দিন ঠিক করে আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জুবায়ের রহমানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ। আজহারের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেওয়া হয়।
আদালতে আবেদনটি উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলামের মামলার সব প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন। প্রধান বিচারপতির আদালতে ২২ এপ্রিল শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে। আশা করি দ্রুতই নিষ্পত্তি হবে ইনশাআল্লাহ।
এদিকে আজহারুল ইসলামের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে জামায়াতের নেতাকর্মীদের মাঝে। আজকের শুনানিতে তার মুক্তি না হলে দলের মধ্যে অসন্তোষ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক নেতা।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে এটিএম আজহারকে আপিলের অনুমতি দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পান এটিএম আজহার। এছাড়া ৫ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অমানবিক অপরাধের দায়ে ২৫ বছর ও ৬ নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে শুনানির পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। আপিল বিভাগের রায়ে ২, ৩, ৪ ও ৬ নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখা হয়। আর ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়।
ওই দিন আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী (প্রয়াত) খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন (প্রয়াত) অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ওই রায়ের রিভিউ চেয়ে একই বছরের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে সংশ্লিষ্ট আবেদন করেছিলেন এই জামায়াত নেতা। ২৩ পৃষ্ঠার পুনর্বিবেচনার ওই আবেদনে মোট ১৪টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।
আফরোজা