ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

রক্ষীবাহিনীর মতো আচরণ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: নাছির উদ্দীন

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২১ এপ্রিল ২০২৫

রক্ষীবাহিনীর মতো আচরণ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: নাছির উদ্দীন

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখন রক্ষীবাহিনীর মতো আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। রবিবার (২০ এপ্রিল) পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ছাত্রদলের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নাছির উদ্দীন বলেন, "এই প্ল্যাটফরমটি এখন অভিভাবকহীন, নেতৃত্বহীন এবং অগঠিত একটি শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তারা সারা দেশে চাঁদাবাজি, দখলবাজি এমনকি হত্যাকাণ্ডেও জড়িয়ে পড়ছে। আমাদের এক ছাত্রদল নেতাকেও তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে।"

তিনি আরও বলেন, "গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া এই সংগঠনের ব্যানার ব্যবহার করে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়েছে। অথচ সেই প্ল্যাটফর্মের কেউ কোনো দায় নিচ্ছে না। উল্টো তারা এখন শেখ মুজিবের সময়কার রক্ষীবাহিনীর মতো উগ্রবাদী আচরণ করছে। তাই এই সংগঠনটি অবিলম্বে বিলুপ্ত করা উচিত।"

ছাত্রদলের এই শীর্ষ নেতা বলেন, "যেমন পিতামাতা হারানো সন্তান অসহায় হয়ে পড়ে, ঠিক তেমনিভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখন নেতৃত্বের অভাবে পথ হারিয়ে ফেলেছে। তারা আবারও দেশে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েমের চেষ্টা চালাচ্ছে।"

পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে প্রত্যক্ষ ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা চাই, দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিকভাবে নেতৃত্ব নির্বাচন হোক। পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ছাত্রদলের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে রাজনীতি করি।"

তিনি আরও জানান, ছাত্রদল সারা দেশের ২,৫০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নির্বাচন চালুর পরিকল্পনা করেছে, যার মধ্যে ৬০টি মাদরাসাও রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে এবং ছাত্রদল সে বৈষম্য দূর করতে সচেতনতামূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "গত ১৬ বছরে নারীরা নেতৃত্ব থেকে অনেকটা পিছিয়ে ছিল। আমরা চাই তাদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে। আজকের সম্মেলনে অসংখ্য নারী শিক্ষার্থী ভোট প্রদানে অংশ নিয়েছে, তাদের জন্য আমি কৃতজ্ঞ। এই দেশ বদলাতে হলে নারী ভোটারদের ভূমিকা অপরিহার্য।"

নাছির উদ্দীন বলেন, "এই কাউন্সিলের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো গণতন্ত্রের চর্চা ও অনুশীলনকে শক্তিশালী করা। গত ১৫ বছরে দেশে যে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সঠিক ভোটের চর্চা জরুরি।"

এ সম্মেলনে ২,০৪৮ জন ভোটারের মধ্যে ১,৩৬২ জন শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। অনেক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, এটি তাদের জীবনের প্রথম ভোট। ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণা করা হয়। সভাপতি পদে রাকিবুল ইসলাম রাকিব ৮৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ইমরুল কায়েস কাব্য ৩৮২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।

সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তৌহিদুল রহমান আউয়াল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ, মোকসেদুল মোমিন মিথুনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এম.কে.

×