ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

জুলাই আন্দোলনে সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার ছাড়া জনগণ নির্বাচন দেখতে চায় না: জামায়াত আমির

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২০ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ০৫:৪২, ২০ এপ্রিল ২০২৫

জুলাই আন্দোলনে সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার ছাড়া জনগণ নির্বাচন দেখতে চায় না: জামায়াত আমির

ছবি: সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “জুলাই আন্দোলনে যারা নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন, তাদের হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত জনগণ কোনো নির্বাচন দেখতে চায় না। আগে বিচার ও প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সংস্কার, তারপর নির্বাচন— এই দুই বিষয় ছাড়া জনগণ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না।”

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারীর জলঢাকা স্টেডিয়াম মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “যদি সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হয়, তাহলে জনগণ ছয়-নয়ের মতো প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না। তারা ডামি নির্বাচন, নিশিরাতে ভোটচুরি, কুকুর-বিড়াল মার্কা নির্বাচন কিংবা পেশীশক্তি ও কালো টাকার প্রভাবে পরিচালিত নির্বাচন দেখতে চায় না। জনগণ চায় নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, ও স্বচ্ছ নির্বাচন। এজন্য নির্বাচন পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন জরুরি। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ভিত্তিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে হবে, যাতে প্রতিটি ভোটের প্রকৃত মূল্যায়ন হয়।”

শফিকুর রহমান আরও বলেন, “আজকের বাস্তবতা দুই বছর আগেও কেউ কল্পনা করেনি। গোটা দেশ একসময় ছিল এক জীবন্ত কারাগার। ফ্যাসিবাদীরা বিদায় নিয়েছে, কিন্তু তাদের নির্মম নির্যাতনের শিকার জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজাহারুল ইসলাম এখনো কারাগারে। সরকারকে এর জবাব দিতে হবে। নির্দোষ মানুষদের অপরাধী সাজিয়ে যারা জুলুম করেছে, আল্লাহ তাদের জনগণের হৃদয় থেকে গায়েব করে দিয়েছেন।”

তিনি দাবি করেন, “পূর্বতন সরকার জনগণের কণ্ঠস্বর হাইজ্যাক করেছিল। কথা বলার অধিকার ছিল না। প্রতিবাদ করলেই নেমে আসত দমন-পীড়নের খড়গ। সাড়ে ১৫ বছরে তারা গুম-খুন, ধর্ষণ, লুটপাট চালিয়েছে। সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে জামায়াতে ইসলামী ও এর নেতৃত্বের ওপর। আমাদের একে একে ১১ জন সম্মানিত নেতাকে বিচারিক হত্যার মাধ্যমে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাঁচজনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে, ছয়জনকে জেলেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা স্পষ্টভাবে চাই।”

জামায়াত আমির বলেন, “যারা দেশের মাটি ও মানুষকে ভালোবাসে, তারা দেশ ছেড়ে পালায় না। কিন্তু যারা মানুষের কল্যাণে কাজ করে না, তারাই বসন্তের কোকিলের মতো ডাক দিয়ে একসময় পালিয়ে যায়। জামায়াতের নেতারা কখনো পলায়নের চেষ্টা করেননি। বরং তারা মিথ্যা মামলার মুখোমুখি হয়ে ন্যায়বিচারের নামে অবিচার সহ্য করেছেন।”

জলঢাকা উপজেলা জামায়াতের আমির মোখলেছুর রহমান মাস্টারের সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টিম সদস্য ও সাবেক জেলা আমির আব্দুর রশীদ, জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, জেলা নায়েবে আমির ড. খায়রুল আনাম, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম এবং জেলা সহকারী সেক্রেটারি ও নীলফামারী আইনজীবী সমিতির সভাপতি আল ফারুক আব্দুল লতীফ।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/w4pPqOkH9ZQ?si=jrH8NeE63sZ3YSw-

এম.কে.

×