
ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) সিন্ডিকেট থেকে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে 'সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ'- ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করে তারা। পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসনে অভিন্ন ইউজিসি নীতিমালা বাস্তবায়নের দাবি জানায় তারা।
এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, আজকে যদি ৫ আগস্ট না আসতো এবং আওয়ামী সরকারের পতন না হতো, তাহলে যে শিক্ষাগুলো আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করে এখন প্রশাসনে বসে আছে, তাদের ব্যবস্থা আওয়ামী শিক্ষকরা কি করতো? তারা এত সহনশীলতা দেখাতো না। যে শিক্ষকরা-শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে তাদের প্রত্যেকের অবস্থা খারাপ হতো। অথচ বিপ্লবের দীর্ঘ প্রায় নয় মাস পার হলেও আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না হয়নি। তারা এখনও বহাল তবিয়তে আছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই দ্রুত তাদের অপসারণ করতে হবে।
কর্মসূচিতে শাখা ইসলামি ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী শিক্ষক হবে সেটা এই আওয়ামী সিন্ডিকেট নির্ধারণ করে দিবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত নির্ধারণে আওয়ামী সিন্ডিকেটের হস্তক্ষেপ মেনে নেয়া হবে না। এই প্রশাসন রাতের বেলায় আওয়ামী সিন্ডিকেটের সঙ্গে মিটিংয়ে বসে, আর দিনের বেলায় বয়ান দেয় যে তারা আওয়ামী বিরোধী। তা মেনে নেওয়া হবে না।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলে দিতে চাই, আপনারা ছাত্রদের মতামতকে গুরুত্ব দিবেন। কারণ এই ছাত্রদের মাধ্যমেই জুলাই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। সিন্ডিকেট থেকে আওয়ামী শিক্ষকদের বিতাড়িত করে ইউজিসির দেয়া নীতিমালা অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া কার্যকর করতে হবে। ইউজিসির প্রত্যেকটা শব্দ বাস্তবায়ন করতে হবে, কেননা আপনারা এতে সংযোজন করে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করেন। নিজেদের ছেলে, মেয়ে এমনকি জামাইকে পর্যন্ত শিক্ষক হতে সুযোগ করে দেন। আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, অনতিবিলম্বে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের অপসারণ এবং শিক্ষক নিয়োগে অভিন্ন ইউজিসি নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।
মোহাম্মদ আলী নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে সবকিছুতে যোগ্য হওয়ার পরেও আমি নাকি শিক্ষক নিয়োগে আবেদন করতে পারবো না। এই বিশ্ববিদ্যালয় কারো বাপ-দাদার সম্পত্তি না। এখানে ফ্যাসিবাদের দোসরদের কোনো ঠাঁই হবে না। ফ্যাসিবাদের বিরোধীতা করার কারণে এই ক্যাম্পাস থেকে আমার ভাই সনদ নিয়ে বের হতে পারেননি, আমার পরিবারকে বার বার লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে। বর্তমান প্রশাসনকে বলতে চাই আপনারা ফ্যাসিস্টদের পথ অনুসরণ করবেন না। আমরা রাস্তায় নামতে জানি। আমাদেরকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না।
কর্মসূচিতে ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী নুরুল ইসলাম শহীদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন শাখা ছাত্রমিশনের সভাপতি জিএ সাব্বির, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় সংগঠক আকিল বিন তালেব, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী প্রমুখ । এসময় বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
আসিফ