
ছবি: সংগৃহীত
গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা, লিঙ্গসমতা, শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতিসহ ৯টি মূলমন্ত্র নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে দলটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। দলের আহ্বায়ক হিসেবে রফিকুল আমীন এবং সদস্যসচিব হিসেবে ফাতিমা তাসনিমের নাম ঘোষণা করা হয়। আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে ২৯৭ জনের নাম ঘোষণা করা হয়।
দলের আত্মপ্রকাশের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আহ্বায়ক রফিকুল আমীন। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে অর্জিত আত্মপরিচয় ও স্বাধীনতা এবং সর্বোপরি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, লাখ লাখ শহীদ ও জনগণের অভিপ্রায়ে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এবং গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় বাধা সৃষ্টিকারী স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি প্রতিষ্ঠিত হলো।
এ সময় ৯ দফা ঘোষণা করে রফিকুল আমীন বলেন, ক্ষমতা কুক্ষিগত না করে যোগ্য নাগরিক গড়ে তুলে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাসী আ-আম জনতা পার্টি। দলটি মুক্তিযুদ্ধ ও গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দুর্নীতিমুক্ত শাসন, লিঙ্গ সমতা, সংখ্যালঘু ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা, শিক্ষা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
উৎপাদনমুখী কৃষি, কর্মমুখী শিক্ষা ও মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জন এবং শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতি ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গ্রামীণ উন্নয়ন, মৌলিক চাহিদা পূরণ, স্বাধীন বিচার বিভাগ, দলীয় অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চর্চা ও দুর্নীতি নির্মূলের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল, ন্যায়ভিত্তিক ও আন্তর্জাতিকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ রাষ্ট্র গঠনে কাজ করবে আ-আম জনতা পার্টি।
দলের সদস্যসচিব ফাতিমা তাসনিম বলেন, ‘দীর্ঘ ১৬টি বছর আমরা যে অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে এসেছি। কোথাও সুশাসন ছিল না। কারও কথা বলার অধিকার ছিল না। ভোট দেওয়ার অধিকার ছিল না কারও। ফ্যাসিস্ট সরকার সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আমরা গোলা-বারুদ, গুম, খুন সবকিছু উপেক্ষা করে এই ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি।’
ফাতিমা তাসনিম আরও বলেন, ‘আজ আমরা কয়েকটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আ-আম জনতা পার্টি গঠন করতে যাচ্ছি। সেগুলো হলো—আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, সামাজিক নিরাপত্তা ও বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলা, সবার জন্য শিক্ষা, উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত সবার বিনা মূল্যে শিক্ষা নিশ্চিত করা, সবার জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা, স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় সাধ্যের মধ্যে আনা, বিনা মূল্যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, গণমাধ্যমসহ সবার নির্বিঘ্নে মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, ব্যবসা-বাণিজ্যের জটিলতার অবসান ঘটানো, ব্যবসাবান্ধব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের মধ্যে বৈষম্য দূর করা, সবার মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করা, দুর্নীতি প্রতিরোধ, আধুনিক লেনদেন পদ্ধতি, কৃষিকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করে কৃষকদের সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করা এবং পরিবেশ রক্ষায় দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ।
অভিনেতা রাশেদ সীমান্তর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, নিসচার চেয়ারম্যান ও অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, জনতার দলের সদস্যসচিব আজম খান প্রমুখ।
শহীদ