ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২

নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তি নয়, সুনির্দিষ্ট ডেডলাইন দিন: মঞ্জু

প্রকাশিত: ১২:০১, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তি নয়, সুনির্দিষ্ট ডেডলাইন দিন: মঞ্জু

বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচন নিয়ে চলমান বিতর্ক প্রসঙ্গে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চাইলেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। সোমবার বর্ষবরণ শোভাযাত্রার আগে দলীয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচনের বিষয়ে অস্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে মঞ্জু বলেন, “আমরা সরকারকে অনুরোধ করব যে, গত আট থেকে নয় মাস পেরিয়ে গেছে। এখনো কেন আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কোন একটা রোডম্যাপ পাচ্ছি না? এই ডিসেম্বর, জুন, এই ধরনের না বলে উনারা যদি আমাদেরকে একটা সুনির্দিষ্ট ডেডলাইন দিতেন,নির্বাচন হবে না, নির্বাচন দীর্ঘায়িত হবে, নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে যাবে-এই ধরনের কথা আমরা কারো কাছ থেকে শুনি নাই। কোন দায়িত্বশীল জায়গা থেকে শুনি নাই। অতএব এটাকে নিয়ে অযথা বিতর্ক বা শংকা তৈরি করার কোন প্রয়োজন নেই। এখানে একটা নিশ্চয়তার অনিশ্চয়তার দোলাচাল আমরা দেখতে পাচ্ছি।”


মঞ্জু বলেন, “আপনারা দেখেছেন, গতকালকে একটা বিষয় নিয়ে খুব বিতর্ক দেখা দিয়েছে। সেটা হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার সাথে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের একটা বৈঠক। বৈঠকের পরে প্রেস নোট যেটা দেয়া হয়, সেখানে প্রথমে বলা হয়েছে যে প্রধান উপদেষ্টা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি নেয়ার জন্য এবং জাতীয় ঐক্যমত্ব তৈরি করার জন্য কমিশনকে অনুরোধ করেছেন। তার প্রায় দেড় ঘন্টা পরে আবার তারা একটা প্রেস নোট দিয়ে বলেছেন তাদের আগের প্রেস নোটটা ভুল হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে একটা ব্যবস্থা করার জন্য। এটা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট সমালোচনা হয়েছে। আমরা নিজেরাও এটার উপরে বক্তব্য রেখেছি। আমরা মনে করি যে এটা যদি সত্যিকার অর্থে ভুল হয়ে থাকে, তাহলে এটা চিহ্নিত করতে উনাদের কেন দেড় ঘন্টা সময় লাগলো?”


তিনি বলেন, “বাংলাদেশ যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, একটা কঠিন পরিস্থিতি আমরা মোকাবেলা করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি-প্রত্যেক জায়গাতেই, প্রত্যেক মহলের মধ্যেই, এক ধরনের অস্থিরতা আমরা লক্ষ্য করছি।”


মঞ্জু বলেন, “একদিকে আমরা দেখছি, প্রধান বড় রাজনৈতিক দল তাদের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়টাকে বারবার সামনে এনে এক ধরনের আশঙ্কা তৈরি করা হচ্ছে যে, বর্তমান সরকার সম্ভবত নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে বা নির্বাচন করতে চাচ্ছে না বা নিজেদের ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছে। কিন্তু আমরা কখনো বর্তমান সরকারের কাছ থেকে এই ধরনের কোন ইঙ্গিত পাইনি। আমরা দেখেছি, উনারা বারবারই বলছেন যে ডিসেম্বরের মধ্যে অথবা যদি দীর্ঘ মেয়াদী সংস্কারের প্রয়োজন হয়, তাহলে জুনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।”


তিনি আরও বলেন, “এখানে আমরা প্রধান রাজনৈতিক দলকে বলব যে বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত আলোচনা থেকে এই যে ‘নির্বাচন হবে না’, ‘নির্বাচন বানচাল করার একটা ষড়যন্ত্র চলছে’, ‘নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে’—এই ধরনের একটা হাইপ তৈরি করার যে চেষ্টা হচ্ছে, এটা আমাদের রাজনৈতিক ঐক্য এবং সংহতির জন্য কাম্য নয়।”


মঞ্জু বলেন, “একইভাবে আমরা সরকারকে অনুরোধ করব যে, গত আট থেকে নয় মাস পেরিয়ে গেছে। এখনো কেন আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কোন একটা রোডম্যাপ পাচ্ছি না? এই ডিসেম্বর, জুন এই ধরনের না বলে, উনারা যদি আমাদেরকে একটা সুনির্দিষ্ট ডেডলাইন দিতেন এবং নিশ্চয়ই এক মাস, দুই মাসের জন্য আমাদের দেশের মানুষরা এত অসহিষ্ণু না, অসহনশীল না।”


তিনি বলেন, “সুতরাং আমরা অনুরোধ করব সকল পক্ষকে—এই জায়গায়, আজকে যেহেতু বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন, আমাদের আজকের ঐক্যের দিন, আমাদের জাতিসত্তার সম্মেলনের দিন—এই দিনটাকে সামনে রেখে আমরা অনুরোধ করব, ‘নির্বাচন হবে না’, ‘নির্বাচন দীর্ঘায়িত হবে’, ‘নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে যাবে’—এই ধরনের কথা আমরা কারো কাছ থেকে শুনি নাই, কোন দায়িত্বশীল জায়গা থেকে শুনি নাই। অতএব এটাকে নিয়ে অযথা বিতর্ক বা শংকা তৈরি করার কোন প্রয়োজন নেই। এটা বরং আমাদের মধ্যে বিভেদ এবং আমাদের মধ্যে পরস্পর অনাস্থা তৈরি করতে পারে।”


মঞ্জু বলেন, “পক্ষান্তরে আমরা সরকার এবং অন্যান্য যত রাজনৈতিক পক্ষ আছে, স্টেকহোল্ডার আছে, সবাইকে বলব—আমাদের ফ্যাসিবাদের বিচার, আমাদের সংস্কার এবং রাজনৈতিক-সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং সর্বোপরি একটা অবাদ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সুনির্দিষ্ট একটা তারিখ বা লক্ষ্যমাত্রা এবং রোডম্যাপ যদি আমরা ঘোষণা করি, তাহলে এই অচল অবস্থা বা এই শংকাটা থেকে আমরা বিরত থাকতে পারবো, আমরা মুক্ত থাকতে পারবো।”

 

সূত্র:https://tinyurl.com/ysddekfj
 

আফরোজা

আরো পড়ুন  

×