
‘আমি কোনো বেআইনি কাজ করিনি, এটা নিছক রাজনৈতিক হয়রানি’-বাংলাদেশে নিজের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ঘটনায় বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া দিলেন শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক। ঢাকার অভিজাত কূটনৈতিক এলাকায় বেআইনিভাবে জমি গ্রহণের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশে নিজের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে টিউলিপ সিদ্দিক সোজাসাপ্টা ভাষায় আখ্যা দিয়েছেন -রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি বলেন, “বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কেউ কোনোদিন আমার সঙ্গে যোগাযোগই করেনি। শুরু থেকেই মিডিয়ার মাধ্যমে আমাকে বিচার করা হয়েছে। আমার আইনজীবীরা নিজেরাই তাদের চিঠি পাঠিয়েছেন, কিন্তু কোনো উত্তর আসেনি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি এই রাজনৈতিক ভিত্তিহীন অপবাদ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানি। আমি কোনো অন্যায় করিনি, তার একটুও প্রমাণ নেই।”
বাংলাদেশি গণমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এমন ৫৩ জনের বিরুদ্ধে একযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। টিউলিপ সিদ্দিকও সেই তালিকায় রয়েছেন। শেখ হাসিনা গত বছরের আগস্টে দেশত্যাগ করেন, তার আগে আন্দোলন দমনে সরকারের বিরুদ্ধে সহিংস অভিযানের অভিযোগ ওঠে।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সরকারের নৈতিকতা বিষয়ক উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস জানান, টিউলিপ সিদ্দিক কোনো নীতিমালাও ভাঙেননি এবং তাঁর সম্পদ নিয়ে কোনো বেআইনি উৎসের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যদিও কিছু সম্পত্তির রেকর্ড সময়ের ব্যবধানে খুঁজে পাওয়া যায়নি, তবে অপরাধের কোনো ইঙ্গিতও মেলেনি।
এর আগে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ব্রিটিশ ট্রেজারির অর্থনৈতিক সচিব পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ। তিনি জানান, পরিবারের সম্পত্তি বিতর্ক যেন সরকারকে বিব্রত না করে, সে কারণে নিজ থেকেই পদত্যাগ করেছেন।
দ্যা সানডে টেলিগ্রাফ জানায়, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগ করেছে, টিউলিপ ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় ৬৭০ বর্গমিটার জমি পেয়েছেন তাঁর খালার মাধ্যমে। অভিযোগ আরও, শেখ হাসিনা এই জমি বরাদ্দ দিয়েছেন টিউলিপের মা শেখ রেহানা, ভাই রাদওয়ান ও বোন আজমিনার জন্য। তারা সবাই যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন।
যদিও যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে এখনো কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই, তবে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন চায় টিউলিপকে বিচারের আওতায় আনতে। টিউলিপের প্রতিনিধির সাফ কথা.“এই মামলায় কোনো ভিত্তি নেই। জমি বরাদ্দের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁকে হয়রানির উদ্দেশ্যে এই মামলা করা হয়েছে।”
সূত্র:দ্যা গার্ডিয়ান
আফরোজা